E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

পদ্মা নদীর ভরাট বালু বিক্রির অভিযোগে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৮ ১৭:৪২:৩২
পদ্মা নদীর ভরাট বালু বিক্রির অভিযোগে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

বিশেষ প্রতিনিধি : দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া-নাজিরগগঞ্জ রুটের নৌ চ্যানেল প্রশস্তকরণকল্পে পদ্মা নদীর ধাওয়াপাড়া পয়েন্টে ভরাট বালু (খননকৃত বর্জ্য) বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। 

এ অভিযোগে আজ শনিবার সকালে মোবাইল কোর্টের অভিযান চালিয়ে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক।

রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া ফেরি ঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী প্রকৌশলী মোঃ এখলাছ উদ্দিন বলেন, নৌপথে রাজবাড়ী ও পাবনার মধ্যকার যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে ধাওয়াপাড়া ফেরী ঘাট এলাকায় ড্রেজিং কাজ শুরু করা হয়। বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষে এ কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২ টি ড্রেজার।

তিনি আরও বলেন, ধাওয়াপাড়া ফেরি ঘাট এলাকায় ৩ ধাপে পলি অপসারণের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ২ ধাপে খনন কাজ শেষ হয়েছে। এ খনন কাজের মাধ্যমে ২০ লক্ষ ঘন ফুট পলি অপসারণ করা হয়েছে। এ গুলো ধাওয়াপাড়া ফেরী ঘাটের অদূরে মহিন এন্টার প্রাইজের তত্ত্বাবধানে বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠের এলাকা জুড়ে ঘিরে রাখা একটি বেডে রাখা হয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, ব্যবসায়ী ফজলু বাঙ্গাল ওরফে ফজলুল হকের তত্ত্বাবধানে থাকা কয়েক একর খাস জমি নিয়ে গড়ে ওঠা বিশাল আকৃতির বেডে এসব পলি রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফজলুল হক বলেন, স্থানীয় ভাবে এগুলো দেখভালের জন্য মাহিন এন্টার প্রাইজকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাহিন এন্টার প্রাইজ খননকৃত পলি স্থানীয় ভাবে বিক্রি ও খাস জমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করে অর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। যদিও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মালেক শিকদার অভিযোগ মানতে নারাজ।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ২ ধাপে উত্তোলনকৃত ২০ লাখ ঘনফুট ভরাট বালু (বালি/মাটি) থেকে এক ছটাক বালুও কোন প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয়নি। এ গুলোর পুরোটাই বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

বালু শ্রমিক আরিফ বলেন, ২শ ফুটের ভরাট বালু ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি ঘন ফুট ভরাট বালুর মূল্য ৫ টাকা হিসেবে এ পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বর্জ্য (বালি/মাটি) উত্তোলন/অপসারণ করা হয়েছে।

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর রাজবাড়ী জেলার ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে নিজ খরচে ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল পরিবহণের নিমিত্তে মাহিন এন্টার প্রাইজকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে সংরক্ষিত ডাইক ব্যাতীত অন্য কোন স্থান হতে ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল (বালি/মাটি) উত্তোলন/অপসারণ না করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়।

রাজবাড়ী কালেকটরেটের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মোঃ পলাশ উদ্দিন বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে শুধুমাত্র সরকারী/ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে খননকৃত বালি/মাটি বিনামুলে সরবরাহ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এগুলো বিক্রি বা নিজ জমি ভরাটের কাজে ব্যবহারের সুযোগ নেই।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেন, বিনামূল্যের বালু বিক্রির অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক শিকদারকে বালি মহাল ব্যবস্থাপনা আইনে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৩ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test