E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

ময়মনসিংহে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন তিন যৌনকর্মী

২০২৫ জানুয়ারি ১১ ১৮:২৮:০১
ময়মনসিংহে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন তিন যৌনকর্মী

নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম এর সহৃদয় হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ময়মনসিংহ নগরীর রমেশ সেন রোডস্থ পতিতা পল্লীর তিন জন যৌনকর্মী। 

গতকাল শুক্রবার ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম এর নির্দেশে জেলা ডিবি'র অফিসার ইন-চার্জ মোঃ সহিদুল ইসলাম নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের চৌকস টিম গত ৯ জানুয়ারী রমেশ সেন রোডস্থ পতিতা পল্লীতে অভিযান চালিয়ে ৩ জন যৌনকর্মীকে উদ্ধার করেন।

ডিবি সুত্র জানান, গত ৯ জানুয়ারী উদ্ধার হওয়া যৌনকর্মীদের মধ্যে থেকে একজন কিশোরী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে সুকৌশলে তার মায়ের মোবাইলে যোগাযোগ করতে সক্ষম হলে, তার মা-বাবা সেদিনই ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং মেয়েটিকে পরিবারে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পুলিশ সুপার সহৃদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কে। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা অফিসার ইন-চার্জ মোঃ সহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স নিয়ে কোতোয়ালী থানাধীন রমেশ চন্দ্র সেন রোডস্থ পতিতা পল্লীতে অভিযান চালিয়ে উক্ত ভিকটিম ও তার সাথে অপর দুই হতভাগ্য কিশোরীকে উদ্ধার করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আসেন।

উদ্ধার হওয়া কিশোরীরা জানান, আর্থিক টানাপোড়েনের সংসারে প্রায় ২ বছর আগে রংপুর মহানগরী থেকে কিশোরী ঝর্ণা (ছদ্দনাম) বাড়ী থেকে বের হয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টেস চাকরী করতে আসে। জনৈক সাগর নামে এক ব্যক্তি তাকে ভালো বেতনের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত পানি পান করিয়ে মেয়েটিক অজ্ঞান করে এবং টাকার বিনিময়ে ময়মনসিংহে যৌনপল্লীতে বিক্রয় করে দেয়। আরেক কিশোরী জবা (ছদ্দনাম) সৎ মায়ের পরিবারে অসম্মান সহ্য করতে না পেরে প্রায় ১ বছর ৪ মাস আগে বাড়ী থেকে ঢাকা এলে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাকে একটি বিউটি পার্লারে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ময়মনসিংহ যৌন পল্লীতে বিক্রয় করে দেয়। অপরজন সৎ মায়ের সাথে রাগ-অভিমানের বশবর্তী হয়ে প্রায় ১০ মাস আগে তিথি (ছদ্দনাম) নামের আরেক কিশোরীও একই পরিণতি বরণ করে ময়মনসিংহে যৌনপল্লীতে আসেন।
উদ্ধারকৃত ভিকটিমরা পতিতাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে আবারও সুস্থ সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করে এবং তাদেরকে এখানে আনা সম্পর্কে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করবে না বলে অবহিত করলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদেরকে স্ব-স্ব পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তাদেরকে ফিরে পেয়ে অশ্রুসিক্ত পিতা-মাতার হৃদয়ে প্রশান্তির আবেশ ছড়িয়ে পড়ে।

উদ্ধার হওয়া এক কিশোরী পরিবার জানান, ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার স্যার আমাদের প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এটা সারাজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্বরন রাখবো।

(এনআরকে/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test