E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

থানা থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় দুই পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

২০২৫ জানুয়ারি ১০ ১৫:২২:২৪
থানা থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় দুই পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানা থেকে হত্যা মামলার আসামি পালানোর ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

টাকার বিনিময়ে আসামি পালানোর নাটক সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ হত্যা মামলার বাদীর । এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মুকসুদপুর থানার এসআই শামীম আল মামুন ও কনস্টেবল মাহফুজ মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া ঘটনার তদন্তে বৃহস্পতিবার ( ৯ জানুয়ারি) এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮ টায় দিকে হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি হৃদয় শেখ (২৫) মুকসুদপুর থানা থেকে পালিয়ে যায়।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলাদা কক্ষ থাকলেও বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ছুটিতে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পালের রুমে নেওয়া হয় হৃদয়কে। পুলিশের দাবি জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হাতকড়া খুলে কৌশলে পালিয়ে যায় আসামি হৃদয় শেখ। এটি জানাজানি হলে রাত ১০ টার দিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল।

মামলার বাদী নিহত আকাশ মাতুব্বরের বাবা ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার দামদরদী গ্রামের শাহা আলম মাতুব্বর বলেন, নগরকান্দা থানার গজারিয়া গ্রামের তরিকুল মাতব্বর, রাখালগাছী গ্রামের আল আমিন শেখ, দামদরদী গ্রামের রনি ফকির, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের হৃদয় শেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিনজন আমার ছেলে ভ্যান চালক আকাশকে ডেকে নিয়ে তার ভ্যানে করে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করত। তারা আমার ছেলেকে বিভিন্ন অপরাধে জড়াতে প্রস্তাব দিত।

বিষয়টি আমার ছেলে আমাদেরসহ এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে বলে দেয়। এতে আসামিরা আমার ছেলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। আমার ছেলেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অকথ্য ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এরপর আসামিরা আমার ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আমার ছেলে বাড়ি থেকে ভ্যান চালানোর উদ্দেশে বের হয়। ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে নগরকান্দার চাঁদহাট বাজার থেকে তাকে মুকসুদপুর উপজেলার দুয়ারীডাঙ্গা গ্রামের বক্কার মিয়ার মেহগনিবাগানে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় ।

এরপর মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ইটবেঁধে পুকুরে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখে। পরের দিন ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মেহগনি বাগানে আকাশের স্যান্ডেল পাওয়া যায়। ভ্যানটি মুকসুদপুর উপজেলার নারায়নপুর খালিসাকান্দা গ্রামের মইনুদ্দিন মোল্লার বাড়ির পশ্চিম পাশে লেবু ও লিচু বাগান থেকে উদ্ধার করা হয় । এ ব্যাপারে ৮ ফেব্রুয়ারি নগরকান্দা থানায় আমি একটি সাধারণ ডায়েরি করি । এর কিছু দিন পর দুয়ারীডাঙ্গা গ্রামের পুকুরের কচুরিপানা পরিষ্কার করার সময় বস্তাবন্দি মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে আকাশের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া আসামি হৃদয় শেখসহ পাঁচজনকে আসামি করে ৮ মার্চ মুকসুদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি।

শাহা আলম মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, টাকার বিনিময়ে আসামি হৃদয়কে পালাতে সহায়তা করেছে পুলিশ। এখন তারা এটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে।

মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, থানায় যে ঘটনা ঘটেছে এটা একটা দুর্ঘটনা। সে সময়ে যে পুলিশ সদস্য ছিল তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও তদন্ত হচ্ছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামীম আল মামুনসহ দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মুকসুদপুর সার্কেলের এএসপি আব্দুল বাসেত জানান, এ বিষয়ে ৩ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছে। বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখছি । ৩ দিনের মধ্যে আমি প্রতিবেদন দাখিল করব।

পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।

(এমএস/এএস/জানুয়ারি ১০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test