E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

জামালপুরে মামলার বাদীকে হুমকি, আসামি গ্রেপ্তারের দাবি

২০২৫ জানুয়ারি ০৮ ১৮:৫৩:৩৮
জামালপুরে মামলার বাদীকে হুমকি, আসামি গ্রেপ্তারের দাবি

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরের মেলান্দহে মামলার দুই সপ্তাহ পরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ১৪ জন আসামি। আর বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে তারা। আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী মামলার বাদী ও পরিবার।

আজ বুধবার দুপুরে জামালপুর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন মামলার বাদী সামসুন্নাহার সুমাইয়া। তিনি মেলান্দহ উপজেলার তেঘরিয়া সিরিঘাট গ্রামের মৃত শামসুল হক আকন্দের মেয়ে।

সুমাইয়া বলেন, গত ২১ অক্টোবর ২০২৪ সালে তেঘরিয়া সিরিঘাট এলাকায় আমেরিকা প্রবাসী হাফিজ রওশন কাজল তার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্য করে আশপাশের কয়েক গ্রামের শতশত মানুষকে জমায়েত করে খাবারের আয়োজন করেন। দুপুরের দিকে তার ভাই হাফিজ রায়হান সাদার নেতৃত্বে হাফিজ রওশন কাজলের সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসহ নিয়ে আমার ভাই সায়েদুল ইসলাম শিপনের নিকট ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমার ভাই অস্বীকার করিলে তারা আমাদের বাড়ি-ঘর, গেইট, টিনের বেড়া ভাংচুর করে এবং টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যান। এছাড়া আমার ভাইকে ঘরের ভেতরে আটকিয়ে রাখেন এবং হাফিজ রায়হান সাদার ছোট ভাই মৃত হাফিজ মওলা ভুট্টোর ছেলে ফাহাদ হাফিজ দিগন্ত আমাদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন।’

খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে তারা সেখানে উপস্থিত হলে জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান তাদেরকে বলেন, এটি আমাদের নিজেদের একান্ত ব্যাপার। এ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজে বিষয়টি মীমাংসা করে দেবে, এ কথা বলে তাদেরকে চলে যেতে বলেন। এরপর বিকেল ৩ টার দিকে লিগ্যাল এইড আদালতের কর্মকর্তারা তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা দেখেন ইতোমধ্যে ঘর-বাড়ি, গেট, বাউন্ডারি ভাংচুরসহ অনেকগুলো গাছ কাটা হয়েছে। সেগুলোকে তারা ভিডিও এবং ছবির মাধ্যমে সংগ্রহে করে নিয়ে যান। এরপর ১৯ নভেম্বর আমরা আদালতে স্বত্ব ঘোষণার মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত এক সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ প্রদান করেন।’

সুমাইয়া বলেন, গত ২০ ডিসেম্বরে হাফিজ রায়হান সাদা এলাকায় লোকজনের কাছে ঘোষণা দিয়ে অপরিচিত মহিলার মাধ্যমে থানায় মানব পাচারের একটি মামলা দায়ের করায়। এরপর তার প্রভাব খাটিয়ে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছে। অত:পর লিগ্যাল এইড আদালত মামলার মাধ্যমে বিরোধ নিস্পত্তি না করতে পারায় আমাদেরকে গত ২২ ডিসেম্বরে উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করার প্রতিবেদন দিলে গত ২৪ ডিসেম্বর আমরা আদালতে হাফিজ রায়হান সাদাসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাত নামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করার পর আদালত ২৪ ঘন্টার মধ্যে মামলাটি থানায় অন্তর্ভূক্ত করার নির্দেশ দেন। এই মামলায় আসামী গ্রেপ্তারের সুযোগ থাকলেও তা করছে না পুলিশ।’

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত ও মামলার প্রধান আসামি হাফিজ রায়হান সাদা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছে, তারা আওয়ামী লীগের পদধারী। তারা ১৭ বছর মানুষের জায়গা জমি দখল করেছে। ৫ আগস্টের পরে এখন সবাই যার যার জমি বুঝে নিচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে কেন এমন অভিযোগ করেছে তা আমার বোধগম্য নয়। তাদের জ্বালায় আমরা এতোদিন বাড়িতে ঢুকতে পারিনি। তারা অনেকদিন আগে আমাদের বাড়িতে হামলা করেছিলো। এখন আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে।'

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামান বলেন, মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এই মামলায় কোনো পরোয়ানা জারি হয়নি বলেও জানান।

(আরআর/এসপি/জানুয়ারি ০৮, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৯ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test