E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ

সাড়ে দশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৩৩ শিক্ষক

২০২৪ ডিসেম্বর ৩০ ১৬:৫৫:৩২
সাড়ে দশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৩৩ শিক্ষক

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনার্স, স্নাতক (পাশ) ও উচ্চ মাধ্যমিকের মোট ১০ হাজার ৬৫৭ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য রয়েছেন মাত্র ২৯ জন শিক্ষক। ফলে বিধি অনুযাযী কাশ রুটিং করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরম সমস্যা। প্রায় ৪০ বছর আগে কলেজ জাতীয়করণের সময়ে সৃষ্ঠ পদে শিক্ষকের সংখ্যা ছিলো ৪৪ জন। এর ১১টি পদ শুণ্য। পরে আরো বিষয় খোলা হলেও সেগুলোতেও শিক্ষক নেই। অনার্স কোর্স চালুসহ কলেজের কলেবর অনেক বৃদ্ধি পেলেও বিধি অনুযায়ী সৃষ্ঠ পদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি। শিক্ষক সংকটে নিয়মিত কাস নিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা বলছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অতিথি শিক্ষক দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে চালানো হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। যেকারণে শিক্ষার্থীরা বেশীরভাগই ক্লাশ বিমূখ হয়ে প্রাইভেটে নির্ভরতা বেড়েছে।

জাতীয় শিানীতি-২০১০ অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৩০ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। আর ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৩২২.৯৪। অর্থাৎ ৩২৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছেন মাত্র ১ জন শিক্ষক।

সরেজমিনে কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ঈশ্বরদীতে ১৯৬৩ সালে স্থাপিত এই কলেজটি ১৯৮৬ সালে জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণের সময় স্নাতক (পাশ) কোর্স এবং উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী চালু ছিল। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ১২টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়েছে। অর্থনীতি ও প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এই সময়কালে কলেজে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে। পাঁচটি বিশালায়তনের ভবন রয়েছে। লিফটের ব্যবস্থাসহ ছয়তলা বিশিষ্ঠ আরও ১টি ভবন নির্মাণাধীন। ২৯টি কক্ষে চলে পাঠদান । অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক মিলানায়তন, অডিটোরিয়াম এবং ১২টি বিভাগ শীততিাপ নিয়ন্ত্রিত ও আধুনিক সাজে সজ্জিত। বিশালাকৃতির গ্রন্থাগার থাকলেও লাইব্রেরিয়ান নেই। রয়েছে আধুনিক ডিজিটাল ল্যাব ও ৪টি বিজ্ঞানাগার। বিজ্ঞানাগারের প্রদর্শকের দুটি পদও শুণ্য। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে এবং বাণিজ্যের ২টি বিষয়ের অনার্সে আইসিটি বিষয় বাধ্যতামূলক হলেও শিক্ষক নেই। তেমনি কলেজে কৃষিবিজ্ঞান বিষয় খোলা হলেও নেই শিক্ষক। পদার্থ, ব্যবস্থাপনা ও গণিতের শিক্ষকরা আইসিটির ক্লাশ নেন বলে অধ্যক্ষ জানান।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এস এম রবিউল ইসলাম জানান, জাতীয়করণের সময় কলেজে ৪৪টি পদ সৃষ্ঠ হয়। বর্তমানে ১১টি পদে শিক্ষক নেই। জাতীয়করণের পর অনার্স কোর্স চালুসহ কয়েকটি নতুন বিষয় খোলায় বেড়েছে শিক্ষার্থী সংখ্যা। কিন্তু নতুন করে পদ সৃষ্ঠ হচ্ছে না। ফলে জোড়াতালি দিয়ে কোন কোন বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি কলেজে অনার্স শ্রেণীতে অধ্যপক ১ জন, সহযোগী অধ্যাপক ২ জন, সহকারি অধ্যাপক ৩ জন এবং ৪ জন প্রভাষকসহ মোট ১০ জন শিক্ষক থাকার কথা। সেই হিসেবে শুধুমাত্র অনার্সের ১৪টি বিভাগে ১৪০ জন শিক্ষক থাকা কথা।

এছাড়াও রয়েছে আইসিটি ও কৃষিবিজ্ঞানসহ উচ্চ মাধ্যমিকের আরও কয়েকটি বিষয়। সাত একর জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ইতোমধ্যেই দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। রয়েছে মসজিদ, ফুলের বাগান ও পুকুর। অডিটোরিয়ামসহ সকল বিভাগীয় অফিস শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত। এখানে মাষ্টার্স শ্রেণী খোলার সমূহ সম্ভাবনা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠির চাহিদাও রয়েছে। কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারণে মাষ্টার্স খোলা যাচ্ছে না।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০২ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test