E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

আড়াই কোটির ফুটওভার ব্রিজে পড়ে না ‘পা’

২০২৪ ডিসেম্বর ০৪ ১৯:২২:২৭
আড়াই কোটির ফুটওভার ব্রিজে পড়ে না ‘পা’

একে আজাদ, রাজবাড়ী : আড়াই কোটি টাকা দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ফুটওভার ব্রিজ। তবে তাতে কারও পা পড়ে না। সন্ধ্যা লাগলেই ব্রিজটিতে বখাটে ছেলেরা নেশা করে। ব্রীজটির অবস্থান রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর বাজারে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণের পর থেকে ব্রিজটি ব্যবহার করে না পথচারীরা।

জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুই কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ফুটওভার ব্রিজটি তৈরি করা হয়। নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল ঢাকার ডিলাক্স এন্টারপ্রাইজ। রাজবাড়ী-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর বাজারে এই ফুটওভার ব্রিজটি তৈরি হয়।

আলাদীপুর বাজারটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে রাজবাড়ী-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক। বাজারের পূর্ব দিকে রয়েছে আলাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়, আলাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সড়কের পাশ দিয়ে রয়েছে বিদ্যালয়ের মার্কেট। পশ্চিম পাশে রয়েছে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও আলাদীপুর বাজার।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটিতে রাজবাড়ী-ফরিদপুর, দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া রুটে লোকাল বাস চলাচল করে। এ ছাড়া রাজবাড়ী-ঢাকা, কুষ্টিয়া-ঢাকা রুটসহ বেশ কয়েকটি রুটে এই সড়ক দিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল করে।

সড়কটি এক লেনের হওয়ার কারণে মাঝখানে কোনো ডিভাইডার নেই। আলাদীপুর বাজারের উত্তর ও দক্ষিণে সড়কটিতে দেওয়া আছে গতিরোধক। ফলে যানবাহন আলাদীপুর বাজার পার হওয়ার সময় গতি কমিয়ে দেয়। এজন্য রাস্তা পারাপারের জন্য শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ কেউই ফুটওভার ব্রিজে ওঠে না। ফলে বিভিন্ন সময় ফুটওভার ব্রিজের ওপর আড্ডা দেয় নানা বয়সী ছেলেরা। আর সন্ধ্যার পর বসে মাদকের আড্ডা।

আলাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের সমাবেশে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরি। শিক্ষার্থীদের ওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে বলি। কিন্তু তারা কেউই ব্যবহার করে না। তবে আমরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এখানে ফুটওভার ব্রিজ করার জন্য কোথাও কখনো চিঠি দিইনি বা বলিনি। হঠাৎ করেই দেখলাম, এখানে ফুটওভার ব্রিজ করা হচ্ছে। কারা নির্মাণ করেছে, কারণ কী, এসব কিছুই জানি না। রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজটি কেউই ব্যবহার করে না।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকের হোসেন বলেন, ‘এই ফুটওভার ব্রিজ বানিয়ে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হয়েছে বেশি। স্কুল টাইমে ছেলেরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ব্রিজের ওপরে বসে থাকে। আবার রাতে বখাটে ছেলেরা আড্ডা দেয়। কাউকে ব্রিজের ওপর দিয়ে রাস্তা পার হতে দেখি না। এই ব্রিজ এখানে না বানিয়ে শহরে বানালে মানুষের কাজে লাগত।’

স্কুলছাত্র আবির শেখ বলেন, ‘রাস্তা পার হতে ১০ সেকেন্ড সময় লাগে। আর ব্রিজে উঠে পার হতে গেলে পা ব্যথা হয়ে যায়। এজন্য ব্রিজে উঠি না।’

রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাজস খান বলেন, ‘ওই ফুটওভার ব্রিজ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। আমি রাজবাড়ী যোগ দেওয়ার কয়েক বছর আগে এই ফুটওভার ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আমি ব্রিজটি সম্পর্কে কিছুই জানি না।’

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test