E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে উঠার পরদিন ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার

২০২৪ নভেম্বর ২৮ ১৯:০২:২৭
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে উঠার পরদিন ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ সদরের একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে মো. ফেরদাউস শেখ (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাথালিয়া গ্রামের পিঠা গার্ডেন হোটেল থেকে লাশটি উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।

মারা যাওয়া ফেরদাউস শেখ টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া পার ঝনঝনিয়া গ্রামের ইমদাদুল হক শেখের ছেলে। তিনি গরু খামারের ব্যবসা করতেন। এ ছাড়া তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের আগামী সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার ভাই মিজানুর রহমান দাবি করেছেন।

আজ বৃহম্পতিবার দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে মো. ফেরদাউস শেখের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাদ আসর বাঁশবাড়িয়া ঝনঝনিয়া মাদ্রাসা মাঠে যানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর সাজেদুর রহমান জানান, তারা হোটেলের কক্ষ থেকে ফেরদাউস শেখের মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে তাঁর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান আরো বলেন, বুধবার দুপুরে পিঠা গার্ডেনের ব্যবস্থাপক তুহিন মোল্লা গোপালগঞ্জ সদর থানায় এসে জানান, মঙ্গলবার রাতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেন এক ব্যক্তি (ফেরদাউস শেখ)। বুধবার সকালে কৌশলে ওই নারী কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। দুপুরে ফেরদাউস শেখ নামের ওই ব্যক্তি কক্ষ থেকে বের না হলে তাঁর কক্ষে গিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ মরদেহ দেখতে পান। ওসি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হোটেল ব্যবস্থাপকের কথার প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।

পিঠা গার্ডেনের সত্ত্বাধিকারী ফারুক হোসেন বলেন, ‘দুজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেন। কর্মচারীরা কক্ষ বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে তাঁর মরদেহ দেখতে পান। এ মৃত্যু কীভাবে ঘটল, তা আমাদের জানা নেই।’

ফেরদাউস শেখের ছোট ভাই মিজানুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমার ভাই বাসা থেকে বের হয়। একসঙ্গে ভাত খাওয়ার জন্য রাত ৯টার দিকে ভাইয়ের মোবাইলে কল দিই। আমাকে বলল, আমি টুঙ্গিপাড়ায় বন্ধুর বাড়িতে আছি, পরে আসব। সকালে তার ফোনে কল দিলে বন্ধ পাই। গোপালগঞ্জ থানা-পুলিশ আমাদের কল দিয়ে তার লাশ উদ্ধারের কথা জানায়।’

মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘এক মাস আগে আমার ভাইয়ের যমজ দু’ মেয়ে হয়েছে। তারা দু’ মেয়েকে নিয়ে পরিবারের সবাই আনন্দিত। ভাইয়ের নিষ্পাপ দুটি বাচ্চা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা বাবাকে হারাল।’

মিজানুর রহমান বলেন, তাঁর ভাই ফেরদাউস ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে ১২ নভেম্বর দায়েরকৃত একটি মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা সন্দেহ করছি। মিজানুর তাঁর ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

মিজানুর রহমান আরো বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়ানা তদন্তে শেষে পুলিশ আমাদের কাছে মরদেহ বুঝে দেয়। বাদ আসর যানাজা শেষে পারিবারিক করবস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ২৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test