কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পল্লী উন্নয়ন যুব সমবায় ক্লাব নামের একটি সামাজিক সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  শিক্ষক দুই ভাই ও তাদের চাচা গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে। ১৬ নভেম্বর, শনিবার ভোরের দিকে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে  ক্লাবের অফিসটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ছত্রকান্দা বট তলা রাস্তার পাশে যুবসমাজ ও প্রবীণদের উদ্যোগে ১৯৮৩ সালে পল্লী উন্নয়ন যুব সমবায় নামে ক্লাবটির যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে একটি ছাপড়া ঘরে কার্যক্রম চালানো হয়। গত দুই বছর বিভিন্ন দাতা ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পাকা স্থাপনা তৈরী করা হয়েছিল। তবে এ জমি নিজেদের দাবী করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. তপু মোল্যা, তাঁর ভাই সোহাগ ও চাচা গোলাম কবির মোল্যাসহ ১০-১৫ জন দূর্বৃত্ত ভোরের দিকে ক্লাব ঘরটি ভেঙে দুমড়েমুচড়ে দেন বলে ক্লাবের সদস্যরা জানান। এনিয়ে এলাকায় টানটান উত্তেজনা চলছে।

পল্লী উন্নয়ন যুব সমবায় ক্লাবের উদ্যোক্তা মো. ইয়াছিন বলেন, ১৯৮৩ সালে এই ক্লাবটি স্থাপিত হয়। ১৯৮৪ সালে ৫ শতাংশ জমি এই ক্লাবের নামে দলিল করে দেন জমির মালিক ছত্রকান্দা গ্রামের মৃত আব্দুল হক মোল্যা। শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ক্লাব ঘরটি ভাংচুর করা হয়েছে । জানতে পারি, ক্লাব ঘরটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তৈয়েবুর রহমান তপু মোল্যা তাঁর ভাই শিক্ষক আবু তাহের রহমান সোহাগ মোল্যা ও তাদের চাচা গোলাম কবির সহ ১০-১৫ জন এস্কেভেটর দিয়ে ভেঙে দিয়েছে। তিনি অনতিবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার চান। সেই সাথে ক্লাবের যে ক্ষতি সাধন করেছে তাঁর ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

শেখর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, ওই বটগাছের মোড় ক্লাবঘর নামে পরিচিত। আমার জানা মতে স্থানীয় যুবক, শিক্ষক, ছাত্র, এবং সুশীল সমাজের লোকজন সম্মিলিতভাবে ক্লাবঘরটি নির্মাণ করেছিল। আমি ক্লাবঘর ভাঙার তীব্র নিন্দা জানাই।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. তৈয়েবুর রহমান তপু বলেন, আমাদের পরিবারের সিদ্ধান্তে এটা ভাঙা হয়েছে। তবে এখানে কোন ক্লাবঘর ছিলনা। একটি সমিতির নাম দিয়ে ঘর তুলে জমি দখল করেছিল । ক্লাব থাকলে তার রেজিষ্ট্রেশন থাকবে।

গোলাম কবিরের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নাম্বারে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য নেয়া হয়নি।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু তাহের রহমান সোহাগের মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। মোবাইলে খুদে বার্তা পাঐিশে তার উত্তর পাওশা যায়নি।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, এমন ঘটনা আমার জানা নেই। এমনটি ঘটলে থানা পুলিশ দেখবে। সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন থাকে, তাহলে সমবায় নিভাগ পদক্ষেপ নিবে।

বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) মো. মজিবুর রহমান বলেন, আমরা এখনো এমন অভিযোগ পাইনি। কেউ আমাদের জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(কেএইচএফ/এএস/নভেম্বর ১৬, ২০২৪)