E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ চিরনিদ্রায় শায়িত

২০২৪ নভেম্বর ১৫ ২০:৫৪:৫৬
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ চিরনিদ্রায় শায়িত

যশোর প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ (২৩) শুক্রবার সকালে তার নানা-নানীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন মাস ধরে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সকালে তার মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বেনাপোলের শার্শা উপজেলায় তার গ্রামের বাড়িতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিহত আবদুল্লাহর জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সকাল সাড়ে ১০ টায় বেনাপোল বলফিল্ড মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দলমত নির্বিশেষে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ হাজির ছিলেন। উপজেলা প্রশাসন তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অফ অনার প্রদান করে। জানাজায় মুফতি মাওলানা সায়েদুল বাসার ইমামতি করেন। এর পরপরই বেনাপোলের তার নানা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

আবদুল্লাহর মৃত্যু ছিল স্থানীয় জনগণের জন্য এক বড় আঘাত। তিনি রাজধানী ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তবে তার মৃত্যু শোকে নিমজ্জিত করে পরিবারকে। আবদুল্লাহর বাবা আবদুল জব্বার পেশায় একজন শ্রমিক। যিনি অর্থাভাবে সন্তানদের পড়াশোনা করাতে পারেননি। কিন্তু স্বপ্ন ছিল, আবদুল্লাহ তার পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে। তার মেধা ও প্রচেষ্টার কারণে পরিবারটি অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু আজ সেই পরিবারের আকাশ ভেঙে পড়েছে।

আবদুল্লাহ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং গ্রামে সবার প্রিয়। তিনি ছোটবেলা থেকেই ছিলেন সমাজ পরিবর্তনের প্রতি আকৃষ্ট। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী একজন তরুণ হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, শার্শা উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক আলহাজ্ব খায়রুজ্জামান মধু, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার রাত ২টায় আবদুল্লাহর মরদেহ ঢাকা সিএমএইচ থেকে নৌবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামে পৌঁছলে, তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তার মৃত্যু শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো গ্রামবাসীর জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

আবদুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা এখন গভীর শোকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে তার বাবা, যিনি কখনোই ভাবতে পারেননি যে তাদের স্বপ্নের সন্তান এমনভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে। আবদুল্লাহকে হারিয়ে যেন সব কিছুই থমকে গেছে। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একটি আন্দোলনের জন্য তার আত্মত্যাগ ও শোকের ছায়া ছড়িয়ে গেছে যশোরের প্রতিটি কোণে।

(এসএমএ/এএস/নভেম্বর ১৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test