E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

মসিকে কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন

২০২৪ অক্টোবর ২৪ ১৮:২৮:৩০
মসিকে কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন

নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : ১৮ দিনব্যাপী কিশোরীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাইস্কুলে কিশোরীদের টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন মসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ আলী।

এর আগে সকালে নগর ভবনের শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।

মসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এইচ.কে দেবনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী।

এসময় তিনি জানান, এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৩১৪ টি স্কুলের ২৭ হাজার ৭২৪ জন কিশোরীকে এবং স্কুল বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৮৫৭ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভি ও পাথের সহায়তায় রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে এই টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

টিকা কার্যক্রম নিয়ে মসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এইচ.কে দেবনাথ জানান, জরায়ুরমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে মোট ১৮দিন টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ১০ দিন স্কুল পর্যায়ে এবং পরের ৮ দিন কমিউনিটি পর্যায়ে স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছাত্রীরা টিকা পাবে। কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা নিতে অসমর্থ হলে তারা স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে। এছাড়া স্থায়ী কেন্দ্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীরাও বিনামূল্যে এ টিকা গ্রহণ করতে পারবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মসিকের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মণিদীপা দাস জানান, বছরে বিশ্বের প্রায় ছয় লাখ নারী জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে তিন লাখ মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে বছরে আক্রান্ত হন আট হাজার ২০০ জন, আর মারা যান চার হাজার ৯০০ নারী। দেশে নারীরা যত ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হচ্ছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার।

তিনি আরও জানান, অল্প বয়সে বিয়ে, বেশি সন্তান জন্ম দেওয়া, ঘন ঘন গর্ভধারণ, একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ানো স্বামীদের কারণে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সাধারণত এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়া থেকে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৫-২০ বছর সময় লাগে। এজন্য এই রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই প্রায় শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হন যখন রোগ থেকে সেরে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কিশোরীদের নির্দিষ্ট বয়সে ১ ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

এসময় টিকাদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ প্রদীপ কুমার সাহা, জেলা শিক্ষা অফিসার মোহছিনা খাতুন, মসিকের সচিব সুমনা আল মজিদ, আঞ্চলিক কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম মাজহারুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার ডাঃ রেজোয়ানা ইসলাম, প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চাঁন মিয়া ও মসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সহকারী ওয়ালিউল ইসলাম মামুনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ প্রমূখ।

(এনআরকে/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test