E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

২২ মাসেও ব্যবহার হয়নি ঈশ্বরদী-রূপপুর রেলপথ

২০২৪ অক্টোবর ১৮ ১৭:৩৪:২৬
২২ মাসেও ব্যবহার হয়নি ঈশ্বরদী-রূপপুর রেলপথ

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে ঈশ্বরদী-রূপপুর রেলপথ এবং রূপপুর স্টেশন  ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রপাতি প্রকল্পের অভ্যস্তরে পৌঁছাতে এবং লোড-আনলোডের জন্য তৈরি করা হয়েছে রূপপুর রেলস্টেশন ও ঈশ্বরদী-রূপপুর রেলপথ। এছাড়াও ঈশ্বরদী ইপিজেডে এর মালামাল এই রেলপথে পরিবহণের কথাও সেসময় বলা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। উদ্বোধনের ১ বছর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এক ছটাক পণ্য পরিবাহিত হয়নি এই রেলপথে। বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে নির্মিত রূপপুর স্টেশনটি বর্তমানে ‘ওয়াগন ইয়ার্ড’ হিসেবে এবং রেল কর্তৃপক্ষের মালপত্র রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। নদী ও সড়কপথে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিভিন্ন মালপত্র ও ভারী যন্ত্রাংশ রূপপুর প্রকল্পে আনা হয় বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রেল কর্তৃপ। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলে কর্মযজ্ঞ। প্রকল্পের আওতায় ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন হতে ঈশ্বরদী হয়ে রূপপুর পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেলপথ ও রূপপুর নামে একটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে ১৩টি লেভেল ক্রসিং, ৭টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কম্পিউটার বেইজ কালার লাইট সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা উদ্বোধনের সময় কর্মকর্তারা বলেছিলেন, রূপপুর স্টেশন থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে না। এটি শুধু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালপত্র ও ভারী যন্ত্রপাতি আনা-নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি ঈশ্বরদী ইপিজেড এর মালামালও এই স্টেশন থেকে পরিবহণ করা হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাকশীর পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে আধুনিক আঙ্গিকের রূপপুর স্টেশন জনশূন্য। রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। প্লাটফর্ম এলাকায় বিপ্তিভাবে ময়লা জমে আছে। টিকিট কাউন্টার, গুডস বুকিং রূম, গেস্ট রূম, ভিআইপি রূম, প্রথম শ্রেণির ওয়েটিং রূম, স্টেশনমাস্টার, সহকারী স্টেশনমাস্টারসহ সব কই তালাবদ্ধ।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সদস্য বলেন, রূপপুরের মালপত্র আনা-নেওয়ার জন্য স্টেশন থেকে যে রাস্তা রয়েছে, সেটি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচ দিয়ে। এই দিক দিয়ে আনা-নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। শুনেছি এজন্যই নাকি লোড-আনলোড হচ্ছে না।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন বলেন, নতুন স্টেশন ও রেলপথ দিয়ে রূপপুর প্রকল্পের জন্য কোনো মালপত্র ওঠানো-নামানো বা আনা-নেওয়া এখনও হয়নি। স্টেশন ইয়ার্ডে রেলের নতুন কিছু ওয়াগন ও কোচ রাখা হয়েছে। যা ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা। স্থান সংকুলান ও নিরাপত্তার অভাবে বর্তমানে রূপপুর স্টেশনে এসব কোচ এনে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আহম্মদ হোসেন মাসুম বলেন, বিষয়টি রূপপুর প্রকল্পের ইস্যু। যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁরাই এটি ব্যবহার করবেন। এখন হয়তো ব্যবহার হচ্ছে না, কিন্তু ভবিষ্যতে রূপপুর প্রকল্পের কাজে অনেক বেশি ব্যবহার হতে পারে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে রূপপুর প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।

এবিষয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(এসকেকে/এসপি/অক্টোবর ১৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test