E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

স্বামীর সাথে রাগ করে বাবার বাড়িতে এসে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

২০২৪ অক্টোবর ১৪ ১৮:৫১:৫৫
স্বামীর সাথে রাগ করে বাবার বাড়িতে এসে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

অমর ডি কস্তা, নাটোর : পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে রাগারাগি হওয়ার রাগ করে বাবার বাড়ি চলে আসে স্ত্রী। কিন্তু এ আসাটাই চিরকালের আসা হবে তা ভাবেনি কেউ। বাবার বাড়িতে এসে কাল কেউটে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর।  

নাটোরের বড়াইগ্রামে কাল কেউটে সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ১৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছে এক গৃহবধূ। রবিবার রাত ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত ওই গৃহবধূর নাম লাবনি আক্তার লিজা (২৬)। সে নাটোরের গুরুদাসপুরের বালিয়া গ্রামের শাহিন প্রামাণিকের স্ত্রী এবং বড়াইগ্রামের জোয়াড়ি কাটাসকোল গ্রামের দুলাল হেসেন মৃধার মেয়ে। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে স্বামীর সাথে রাগ করে সে বড়াইগ্রামে বাবার বাড়িতে এসেছিলো বলে জানা গেছে।

ওই গৃহবধূর ভাই রাসেল মৃধা জানান, তার একমাত্র বোন লাবনি আক্তার লিজা স্বামীর বাড়িতে ১০ বছর বয়সী ছেলে সৌরভকে রেখে ১২ বছর বয়সী মেয়ে স্বর্ণাকে সাথে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ২টার দিকে রাতে ঘুমানোর সময় তার আঙ্গুলে সাপ কামড় দিলে সে অসুস্থতা অনুভব করে। পরে খুঁজে দেখা যায় বিছানার কাঁথার নীচে কাল কেউটে সাপ। সে সাপ কোমড়ে মেরে আহত করে সাপসহ অসুস্থ বোন লিজাকে বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক সাপটি সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু ৫দিন পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৪ দিন আইসিইউ (নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র)তে চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার রাতে সে মারা যায়।

পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মানিক রানা জানান, সাপটি মেরে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিলো। এই সাপের বৈজ্ঞানিক নাম কমন ক্রেইট। যাকে বাংলায় কাল কেউটে বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে যে কয়টি সাপের ছোবলে মানুষের মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয়, এটি তার মধ্যে অন্যতম। সাপে কাটা রোগীকে এন্টিভেনম ইনজেকশন সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিলো এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিলো।

পিপলস ফোরাম অন ইনভায়রনমেন্ট (পিএফআই)এর জেলা আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা জানান, কাল কেউটের স্বাভাবিক দৈর্ঘ্য ৩ ফুট থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে সমতল ভূমিতে, চাষাবাদের জমির নিচে এবং জঙ্গলেও থাকে এই সাপ। ইঁদুরের গর্ত, পুরনো বাড়ি, খোলা মাঠ, ইটের স্তূপ, বাগান, বাড়ির ছাদ এবং মানুষের বসতবাড়ির আশেপাশে বাসা বানায় এরা। কেবলমাত্র রাতে চলাচল করে এই সাপ। এরা সাধারণত শান্ত প্রকৃতির। তবে উত্যক্ত করলে দংশন করে। এই সাপ কামড় দিলে আস্তে আস্তে বিষ ছড়ায়। দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হলে অধিকাংশ আক্রান্তরা বেঁচে যায়।

(এডিকে/এসপি/অক্টোবর ১৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test