E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মহাসড়কের পাশে পৌর বর্জ্যর ভাগাড়

২০২৪ সেপ্টেম্বর ২০ ১৮:৩২:৪৭
মহাসড়কের পাশে পৌর বর্জ্যর ভাগাড়

একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে পদ্মার মোড় নামক এলাকায় ময়লার স্তুপে ছোট ছোট টিলার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মহাসড়কের একপাশে প্রায় হাফ কিলোমিটার রাস্তা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে ওই স্থানের সামনে মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ময়লার স্তুপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে চলাচলরত মানুষের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌরসভার স্থায়ী ডাম্পিং ব্যবস্থার কাজ শেষ না হওয়ায় ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের পাশে পদ্মার মোড় এলাকায় পৌরসভার সব আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ, বাতাস, মাটি ও পানি দূষিত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। এ মহাসড়কে যাতায়াতকারী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন যানবহনে চলাচলরত লোকজন ময়লাযুক্ত স্থানে আসার আগেই নাক-মুখ ঢেকে পাড় হচ্ছে। বেশ কয়েকজন পথচারী চলাচলের সময় রুমাল অথবা নিজের গায়ের কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকছেন।

দেবগ্রামের বাসিন্দা হারুন শেখ বলেন, মহাসড়ক দিয়ে গোয়ালন্দ বাজার বা অন্য কোন স্থানে যাওয়ার জন্য ময়লার স্থানে আসার আগেই নাক, মুখ আটকিয়ে যেতে হয়। বর্তমানে এখান দিয়ে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। পৌরসভার এদিকে নজর দেয়া খুবই জরুরী।

রিক্সাচালক মোবারক সরদার বলেন, মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঘাটে অন্তত ৫-৮ বার ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মাঝে মধ্যে চলাচলের সময় দুর্গন্ধে বমি চলে আসে। দিনে দিনে ময়লার পরিমাণ বেড়েই চলছে। তিনি আরও বলেন, মহাসড়কের এই স্থানটি পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। যেহেতু স্থানটি পৌরসভার আয়ত্বের মধ্যে সেহেতু পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ময়লাযুক্ত স্থান দ্রুত পরিস্কারের জোর দাবী জানাচ্ছি।

অটো চালক ফরহাদ শেখ বলেন, যাত্রী নিয়ে এখান দিয়ে যাতায়াত করাই এখন দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। অনেকে এমন দূর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার সব বর্জ্য বা ময়লা ফাঁকা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা উচিত। মানুষের সমস্যা তৈরি করে কোন সেবা না করাই ভালো।

কয়েকজন পথচারী বলেন, প্রতিদিন গোয়ালন্দ বাজার, বাসস্ট্যান্ড, পৌর জামতলা বাজার থেকে পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা রাতে এবং খুব ভোরে ময়লাগুলো মহাসড়কে এনে ফেলে। এতে করে এলাকার পরিবেশ দূষণসহ চলাচলরত রিক্সা, অটোরিকশা ও মাহেন্দ্র চালকসহ যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

তারা বলেন, ময়লাস্তুপের মাইল দেড়েক পরেই সরকারী ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী এ মহসড়ক ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিনিয়ত স্কুলে যাতায়াতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এসব শিক্ষার্থীরা। দ্রুতই এর অবসান চান চলাচলরত পথচারী, রিকশা চালক, মাহেন্দ্র চালক এবং ইট ভাটার শ্রমিকরা।

গোয়ালন্দ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন কুটিন বলেন,ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য উজানচর নতুন পাড়া এলাকায় একটি ময়লা ডাম্পিং করার জন্য কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি কাজটি দ্রুত শেষ হয়ে যাবে এবং এর অবসান ঘটবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলায় বাতাসের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়ায়। শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থাকে চলাচলরত মানুষের।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খোকন উজ্জামান বলেন, ময়লার স্তুপ থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান বৃষ্টি বা অন্য কোনো মাধ্যমে পানির সঙ্গে মিশে খালে গেলে আশেপাশের এলাকাগুলোয় খাল থেকে পানি দিলে ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতিকারক প্রভাব পড়বে।

গোয়ালন্দ পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জোতিশ্বর পাল বলেন, ময়লা ফেলানোর বিষয়টি আমি শুনেছি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test