E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সাবেক সাংসদ এস এম জগলুল হায়দার ও সাবেক পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানসহ ৪৬ জনের নামে মামলা

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১৮ ২৩:৫৩:৫৬
সাবেক সাংসদ এস এম জগলুল হায়দার ও সাবেক পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানসহ ৪৬ জনের নামে মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের রেজাউল ইসলামকে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সাবেক সাংসদ এসএম জগলুল হায়দার, তার ভাই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. এসএম জহুরুল হায়দার, সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, শ্যামনগর থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার  গোবিন্দপুর গ্রামের দেবদাস মণ্ডল ওরফে দেবীরঞ্জন ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহতের ভাই সাঈদুল ইসলাম বাদি হয়ে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলা (পিটিশন-৪)দায়ের করেন। বিচারক চাঁদ মোঃ আব্দুল আলীম আল রাজী নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারন) আইন ২০১৩ এর ৫(৫) ধারা অনুযায়ী ডিআইজি খুলনাকে একই আইনের ২(৩), ২(৪),২(৫), ২(৭), ৭(১), ৮(১), ১৩(১), ১৩(২) ও ১৪(১) ধারাসহ উল্লেখিত আইনে বর্ণিত ধারার আলোকে তিনি নিজে অথবা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পদমর্যাদার নীচে না এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগের তদন্ত করে আগামি ২৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অন্যান্য প্রধান আসামীরা হলেন, সাবেক সাংসদ এসএম জগলুল হায়দারের ভাই এসএম কামরুল হায়দার, সাংসদের ছেলে রাজীব হায়দার, ঈশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান শুকুর আলী, তার ছেলে সাইফুল্লাহ আল মামুন, আশাশুনি উপজেলার দরগাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিয়ারাজ আলী, সাংবাদিক আকবর কবীর ও সদর ইউপি সদস্য মলয় কুমার গাইন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই রাতে খাবার খেয়ে বাদঘাটা গ্রামের আব্দুল মাজেদ দফাদারের ছেলে রেজাউল ইসলাম স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১টার দিকে আসামীরা বাড়িতে এসে রেজাউলকে ডাকাডাকি করে। দরজা খুলে বেরিয়ে আসা মাত্রই কয়েকজন পুলিশসহ আসামীরা তাকে পিঠমোড়া দিয়ে হ্যানবডকাপ লাগিয়ে চোঁখ বেঁধে ফেলে উঠানে ফেলে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে ব্যাপক মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তাকে পুলিশের পিকআপে তুলে শ্যামনগর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার স্ত্রী মাকসুদা ও মামলার বাদি সাঈদুলের সামনে আরো এক দফা নির্যাতন চালানো হয়।

আসামী জহুরুল হায়দার ও আসামী বড় ভেটখালি গ্রামের আব্দুল গফুরের নির্দেশে পরে তাকে থানা থেকে পুলিশ পিকআপে করে খানপুর বাজার থেকে ৪০০ মিটার পশ্চিমে রাস্তার পাশে কালভার্টের উপর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশ তার গলার বাম পাশে, বাম কানের নীচে ও পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে আসামী আব্দুল গফুর তার মাথার বাম পাশে গুলি করে হত্যা করে। পরে রেজাউলের লাশ শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের রোগী বহনকারি ট্রলীতে পাওয়া যায়। পরদিন বিকেল ৫টার দিকে সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ ইঞ্জিনভ্যান যোগে রেজাউলের লাশ বাড়িতে এনে তাদের উপস্থিতিতে দাফন করায়। নিহত রেজাউলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন ছিল। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ২৮ জুলাই রাতে আসামী এসএম জহুরুল হায়দার ও আব্দুল গফুরের নির্দেশে এবং আব্দুল গফুরের অর্থায়নে নিহত রেজাউলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ)/২৩ ধারায় শ্যামনগর থানায় ১৯ নং (জিআর- ১৬১/১৮ নং) মামলা করা হয়।

বাদির সাক্ষরিত ওকালতনামা ও আরজির পাতায় অ্যাড. বাসারত আওরঙ্গী বাবলার সাক্ষর রয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জজ কোর্টের পেশকার টিটু মল্লিক।

(আরকে/এএস/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test