E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ, ইলিশ আহরণে বিপর্যয়

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১৪ ২১:৫৪:৩০
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ, ইলিশ আহরণে বিপর্যয়

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : গভীর নিম্নচাপের কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় সুন্দরবনসহ বাগেরহাটের বিভিন্ন মৎস্য রন্দরে আশ্রয় নিয়েছে এক হাজারের অধিক পিশিং ট্রলার। বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ায় সাগরে টিকতে না পারায় এসব ফিশিং ট্রলারগুলো সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী খালসহ বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ঘাট, শরণখোলা, রায়েন্দা, মোংলাপ ও রামপাল ঘাটে এসে নিরপাপদ আশ্রয় নিয়েছে। শনিবার দিনভর বাগেরহাটে ৫৭ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে মোংলা আবহাওয়া অফিস।

বাগেরহাটে থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যে বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো হাওয়া। সাগর উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া কারনে মোংলা বন্দরের জেটি ও পশুর চ্যানেলের আউটার বারে অবস্থানরত সব বানিজ্যিক জাহাজে পন্য ওঠানামর কাজ দারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এদিকে মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞার শেষে হওয়ার পর থেকে দুর্যোগ পিছু ছাড়ছে না জেলেদের। ইলিশ আহরণে দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। ২৩ জুলাই শেষ হয় সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ওই সময় প্রথম সাগরে রওনা হয়েই টানা এক সপ্তাহর দুর্যোগের কবলে পড়তে হয় জেলেদের।

গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে চলতি সপ্তাহে দুই দফা নিম্নচাপ ও মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে বঙ্গোপসাগর। উত্তাল ঢেউয়ে সাগরে কোনো ট্রলার নামতে পরছে না। ফের বন্ধ হয়ে গেছে ইলিশ আহরণ। বর্তমানে বাগেরহাটে হাজারের অধিক ফিশিং ট্রলার সুন্দরবনসহ উপকূলীয় বিভিন্ন মৎস্য বন্দরে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। গত দেড় মাসে তিন দফা দুর্যোগে পড়ে কোটি কোটি টাকা লোকসানে পড়েছেন বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলের মহাজন ও আড়ৎদাররা।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শরণখোলার মৎস্য আড়ৎদাররা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের কারণে গত রবিবার থেকে টানা তিন দিন সাগরে জাল ফেলতে পারেনি জেলেরা। মাঝখানে দু’দিন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হলে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা ট্রলারগুলো সাগরে ছুটে যায়। কিন্তু এরই মধ্যে ফের হানা গভীর নিম্নচাপ। ফলে শুক্রবার ভোর থেকে আবারও সব ফিশিং ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসে। ফিরে আসা ট্রলারগুলো বর্তমানে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মেহের আলীর চর এবং বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ঘাট, শরণখোলা, রায়েন্দা, মোংলাপ ও রামপাল ঘাটে এসে নিরপাপদ আশ্রয় নিয়েছে।

শরণখোলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, একের পর দুর্যোগের কারণে সাগরে জাল ফেলাই যাচ্ছে না। প্রতি ট্রিপে একেকটি ট্রলারে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু মাছ না পাওয়ায় অধিজাংশ মালিক- মহাজনের চালান ওঠেনা। এবছর প্রত্যেক আড়ৎদার ও মহাজন লাখ লাখ টাকা লোকসানে রয়েছে।

ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন আরো বলেন, ইলিশের যখন ভরা মৌসুম তখনই ৬৫ দিন থাকে নিষেধাজ্ঞা। এর পর আআার অক্টোবর মাসে শুরু হবে ইলিশের প্রজনন মাস। তখন ২২ দিন দেশের সকল নদী ও সমুদ্রে সব ধরণের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ। ফলে ছয় মাসের ইলিশ মৌসুমের তিন মাস চলে যায় নিষেধাজ্ঞায়। বাকি সময় দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঠিকমতো জাল ফেলা যায় না।

ফলে একদিকে লোকসানে ঘানি টানতে টানতে মহাজনরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত লাখ লাখ জেলে চরম সংকটে পতিত হচ্ছে। তাই জেলেদের সার্থে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আর না দেয়ার দাবি জানাই এই ফিশিং ট্রলার মালিক।

(এসএসএ/এএস/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test