E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

হাসপাতালের নারী ক্লিনারের সঙ্গে ইনচার্জের ফোনালাপ ভাইরাল

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১০ ১৮:১৩:০১
হাসপাতালের নারী ক্লিনারের সঙ্গে ইনচার্জের ফোনালাপ ভাইরাল

একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর সদর হাসপাতালের ক্লিনার নিলুফা সরকারের সঙ্গে হাসপাতালের ইমারজেন্সি ওয়ার্ড মাস্টার ও নার্সিং সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের একান্ত মুহূর্তের ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফাঁস হওয়া ৪৪ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের অডিও ফোনালাপটি ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় হাসপাতালসহ জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের অডিও ফাঁস হওয়া হাসপাতালের ক্লিনার নিলুফা সরকার হাসপাতালে আসছেন নিয়মিত। তবে এ বিষয়ে হাসপাতালের ক্লিনার নিলুফা সরকারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক নারী স্টাফ বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন হাসপাতালের তিন বিভাগের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তাই তিনি ক্ষমতার দাপটে বিভিন্ন নারীকে ব্ল্যাকমেইল করতেন। তার কথা শুনতে বাধ্য হতো অনেক নারী। এর আগে তার নামে এক নারী হাসপাতালের ঊর্ধ্বতনের কাছে অভিযোগ করলেও তেমন কোনো সুরাহা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লিনার নিলুফা সরকারের এক নারী সহকর্মী বলেন, নিলুফা সরকার এই হাসপাতালে আসার পর থেকেই তাকে রীতিমতো তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিরক্ত করত মামুন। দেখাত বিভিন্ন ক্ষমতা। এর কিছুদিন পরই তার সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় মামুন। তবে এ ঘটনা হাসপাতালে অনেকেই জানত। এভাবে ফেসবুকে এ বিষয়টা ছড়িয়ে পড়বে, এটা খুবই খারাপ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী বলেন, নিলুফা সরকারের স্বামী ও সন্তান রয়েছে। তারপরও মামুন তাকে হাসপাতালে কোয়ার্টারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তার খাওয়ার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব ধরনের খরচ মেটাত এই মামুন। এখানে শুধু মামুনই খারাপ না, নিলুফাও অনেক খারাপ। কারণ তার স্বামী-সন্তান রেখে এভাবে অন্য পুরষের সঙ্গে মেলামেশা ঠিক হয়নি। এ কারণে ওর সঙ্গে আমরা কেউ মিশি না এবং তেমনভাবে কথাও বলি না।

হাসপাতালে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, রাজবাড়ীর যত ফেসবুক গ্রুপ আছে সেখানে এই অডিওটা দেখেছি এবং শুনেছি। দায়িত্বরত একজন মানুষ আব্দুল্লাহ আল মামুনের দ্বারা এমনটা আশা করিনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া জরুরি।

বিশ্বস্ত এক সূত্র জানায়, আব্দুল্লাহ আল মামুন মূলত জেলা প্রশাসকের কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল ম্যানেজ করতে কাজ করত। আর এ কারণেই ব্যক্তি মামুনের ক্ষমতার দাপটের প্রভাব পড়ে হাসপাতালের নারী স্টাফদের ওপর। মামুন হাসপাতালের নারী কর্মীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন কখনো চাকরির ভয় দেখিয়ে, কখনো লোভ দেখিয়ে। মামুন চাইলে একজন নারী কর্মী সব ধরনের সুবিধা পায়। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারের আয়া বা সুইপার নারী কর্মীরা মামুনের চাওয়া অনুযায়ী তার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশা না করলে বিভিন্ন অযুহাতে চাকরি থেকে তাদের বিদায় দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় হাসপাতালের ইমারজেন্সি ওয়ার্ড মাস্টার ও নার্সিং সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলার অনেকে।

এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি। বারবার কল করা হলেও তিনি তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test