E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

টায়ার কোম্পানির আগুনের আঁচ যশোরের আর এন রোডে

২০২৪ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৯:১৯:৪৯
টায়ার কোম্পানির আগুনের আঁচ যশোরের আর এন রোডে

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : চলার পথে সভ্য সমাজে মানুষের সাথে চাকার পরিচয় ঘটে। সেই চাকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহৃত অংশ টায়ার এবং টিউব। গেল কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে চাকার অপরিহার্য অংশ টায়ার এবং টিউবের দাম বেড়ে চলেছে বিদ্যুৎ গতিতে। অবশ্য দাম বাড়ার পিছনে ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন কোম্পানিগুলোকে। অন্যদিকে কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন সম্প্রতি টায়ার টিউব কোম্পানিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বাজারগুলোতে শূন্য হতে চলেছে গাজী কোম্পানির টায়ার ও টিউব। সব মিলিয়ে বাজারে বিদ্যুৎ গতিতে বাড়তে থাকা টায়ার টিউব এর দামের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ভোক্তা সাধারণের উপর।

আজ শনিবার যশোরের রবিন্দ্রনাথ (আরএন) রোডে অবস্থিত টায়ার টিউবের দোকান ঘুরে দেখা গেছে প্রত্যেকটা কোম্পানির টায়ার টিউবে গড়ে দাম বেড়েছে প্রায় দুইশত থেকে দুই হাজার টাকা। যশোরের এই আরএন রোডে অবস্থিত দোকানগুলোই মূলত সমগ্র জেলার মালামালের চাহিদা পূরণ করে থাকে। শুধু যশোর নয় নড়াইল সাতক্ষীরা চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহ জেলা থেকে চাকার যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ধরণের যান্ত্রিক মালামাল কিনতে সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতাসমাগম ঘটে এখানকার দোকানগুলোতে। যে কারণে জেলার গন্ডি ছাড়িয়ে আর এন রোডের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র দেশে।

কিন্তু বর্তমান সময়ে টায়ার টিউবের বাড়তি দামের কারণে ক্রয় বিক্রয়ে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে এখানকার ব্যবসায়ীদের। চাহিদা মোতাবেক পাচ্ছেন না নির্দিষ্ট কোম্পানির টায়ার টিউব। হঠাৎ দামের রদবদলের কারণে ক্রেতাদের জেরার সম্মুখীত হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

এদিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে সাইকেল ও ভ্যানগাড়ির টায়ার টিউবের দাম বেড়েছে। মেঘনা কোম্পানির সাইকেলের টায়ার বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩১৫ টাকা। অন্যদিকে ভ্যান গাড়ির টায়ার বিক্রি হচ্ছে ৬১৫ থেকে ৬২০ টাকা। এক মাস আগে সাইকেলের টায়ারের দাম ছিলো ২০০ থেকে ২২০ টাকা।ভ্যানগাড়ির টায়ারের দাম ছিলো ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা। আলম নামের কোম্পানির সাইকেল ও ভ্যানের দাম ছিলো ২৭৫ থেকে ৬০০ টাকা। এই কোস্পানির টায়ারের দামও এক মাসের ব্যবধানে গড়ে ১০০ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গাজী কোম্পানির ভ্যানগাড়ির টায়ার টিউব বাজারে নেই বললেই চলে। দুই একটা দোকানে থাকলেও দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।

শুধু টায়ার নয় টিউব গুলোরও দাম বেড়েছে। গেল এক মাসের ব্যবধানে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দাম বেড়ে আলম স্পেশাল টিউব এখন ১৬০ টাকা ও মেঘনা টিউব ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। গাজী কোম্পানির টিউব মার্কেটে নেয়।

মটর সাইকেলের টায়ারের দামও বেড়েছে। এমআরএফ কোম্পানির টিউবলেস টায়ার আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ৫৭০০ টাকা। ১০ থেকে ১২ দিন আগেও যার দাম ছিলো ২৭০০ থেকে ৩২০০ টাকা। এমটিএফ, হোসেন কোম্পানির টায়ারের দাম ১৫০০ থেকে ৩৬০০ টাকা বিক্রি হলেও টায়ার প্রতি দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

নসিমন, করিমন গাড়ির এমটিএফ, হোসেন কোম্পানির টায়ারের দাম ৩৩শ থাকলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে এখন ৪ হাজার টাকা।

পিকআপ গাড়ির এমটিএফ, হোসেন কোম্পানির টায়ারের দাম ৪ হাজার থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮শ টাকা।

মাইক্রো গাড়ির টায়ার চায়না, ডানলর্ব,মেক্সিস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা দরে। কয়েক সপ্তাহ আগেও যা ৫৫শ থেকে ৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে বাস ও ট্রাকের টায়ারের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। সিএসটি কোম্পানির টায়ার বিক্রি হচ্ছে ৭৫ হাজার ৫শ টাকা। এই টায়ারের জোড়ায় বেড়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। ইপিপি প্লাস কোম্পানির টায়ার ৭৪ হাজার বিক্রি হলেও এখন তা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৬ হাজার টাকা। জোড়ায় ২ হাজার টাকা বেড়ে জয়অল কোম্পানির বাস ট্রাকের টায়ার বিক্রি হচ্ছে ৭২ হাজার থেকে ৮২ হাজার টাকা। এমআরএফ ৮শ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫৬ হাজার টাকা। গাজী কোম্পানির টায়ার পিচ বেড়ে সাড়ে ২৬ হাজার টাকা হলেও বাজারে মিলছে না।

আর এন রোডের ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সব টায়ার টিউবের দাম বেড়েছে। গাজীর টায়ার টিউব তো পাওয়াই যাচ্ছে না। এক মাসের ব্যবধানে হুট করেই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।কোম্পানিগুলো সুযোগে সৎ ব্যবহার করছে। মাল বিক্রি করতে গিয়ে ক্রেতাদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নাহিদ হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, মোটরসাইকেলের টায়ার কিনতে এসেছিলাম। ভালো মানের টায়ারের দাম প্রায় ৬ হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। এর আগেও টায়ার কিনেছি। কিন্তু এত বেশি দামে কিনতে হয়নি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, আগুনে পুড়ে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ হয়েছে। এই সুযোগে সব কোম্পানি তাদের মালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সামনে আরও দাম বাড়তে পারে। তারাও বাড়তি দামের কারণে নির্ধারিত পরিমাণ মালামাল বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান।

(এসএ/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test