E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

বাগেরহাটের রাস্তঘাটসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ডুবে গেছে সুন্দরবন

২০২৪ আগস্ট ২৫ ১৯:১৬:১০
বাগেরহাটের রাস্তঘাটসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ডুবে গেছে সুন্দরবন

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড় ও ভারি বর্ষণে বাগেরহাট শহরের প্রধান প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। বাগেরহাটের নদনদীর পানি বিপৎসীমার দুই থেকে চার ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় ও আজ রবিবার ভোর রাত থেকে একটানা ভারী বর্ষণে বাগেরহাট পৌরসভাসহ রাস্তাঘাট ও বসত বাড়ী হাটু পানিতে তলিয়ে যায়। গত ২৪ ঘণ্টার এ জেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে মোংলা আবহওয়া অফিস। এছাড়া ভারী বর্ষন ও জোয়ারের পানিতে তিনদিন ধরে চার ফিট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। 

গত তিনদিন ধরে সুন্দরবন পানির নিচে তলিয়ে থাকলেও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। উজান থেকে নেমে আসা পানির পাশাপশি ভারী বৃষ্টির কারনে বাগেরহাট সদর, রামপাল, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, কচুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে অনেকের পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এমন অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা।

বাগেরহাট শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, সরকারি স্কুল, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুর মোড়, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে দুই থেকে তিন ফুট পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এক ফুটের বেশি পানি রয়েছে পৌরসভা কম্পাউন্ডের মধ্যে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। সড়কে পানি জমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে সাধারন মানুষের। পানিবন্দি পরিবারগুলো এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এদিকে ভারি বৃষ্টির ফলে পেটের টানে সড়কে বের হওয়া রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। যাত্রী না থাকায় যেমন আয় নেই, তেমনি পানিতে নিমজ্জিত রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে।

আরিফ হোসেন নামে রিকশাচালক জানান, চার জনের সংসার চলে আমার পায়ের ওপর। তাই ভোর রাত থেকে ভারি বৃষ্টির মধ্যেই সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। সড়কে লোকজন নেই। বিকাল তিনটা পর্যন্ত ১৪০ টাকা হয়েছে। কি আর করা, একেতো বৃষ্টি তার ওপর সড়কগুলো পানিতে ডুবে থাকায় লোকজন বাসা থেকেই বের হচ্ছেনা।

অটোরিকশা চালাক বেলায়েত খান জানান, শহরের সড়কাগুলো ভাঙা, এর মধ্যে ভারি বৃষ্টি। একটু বৃষ্টি হলেই শহরের অধিকাংশ সড়ক পানি জমে থাকে। যাত্রী নাই তাই ইনকামও নাই। আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

পুরাতন বাজার বাসিন্দাহাসিনা বেগম জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের মেঝেতে পানি উঠে যায়। আমার বাসায়ও পানিতে প্লাবিত হয়েছে। আমাদের এখানকার সব পরিবারের একই অবস্থা। পানি নিষ্কাশন না হওয়া পর্যন্ত আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব না।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার মো. আজাদ কবির জানান, গত তিনদিন ধরে জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার চার ফুট পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। তবে বন্যপ্রাণীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

(এস/এসপি/আগস্ট ২৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test