E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে প্রায় সোয়া ৭ কোটি টাকা

২০২৪ আগস্ট ১৮ ১৫:২২:০৮
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে প্রায় সোয়া ৭ কোটি টাকা

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে মোট ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। সঙ্গে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রুপার গহনা। শনিবার সকাল ৮টায় দানবাক্স খোলার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ গণনা শেষ করে এই পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কাজী মহুয়া মমতাজ।

সমুদয় টাকা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা করা হয়েছে। এর আগে গত ২০ এপ্রিল দানবাক্সগুলো খুলে পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা। এবারের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে দূরবর্তী মানুষজন তেমন আসতে পারেননি বলে এবার টাকার পরিমাণ কিছুটা কম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এবার মসজিদের ৯টি দানবাক্সে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। ব্রি.জে. তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, লে. কর্ণেল রিয়াজুল করিম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এরপর মসজিদের দোতলার সুপরিসর জায়গায় টাকাগুলো ঢেলে গণনার কাজ শুরু করা হয়।

বরাবরের মত এবারও বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রুপার অলঙ্কার পাওয়া গেছে। টাকার সঙ্গে এবারও প্রচুর চিরকুট ও চিঠি পাওয়া গেছে। এগুলিতে মানতকারীদের নানারকম মনোবাঞ্ছার কথা লেখা রয়েছে। প্রতি তিন মাস অন্তর দানবাক্সগুলো খোলার নিয়ম থাকলেও এবারের আন্দোলনের কারণে তিন মাস ২৬ দিন পর খোলা হলো।

মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীরমুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানিয়েছেন, মসজিদ কমপ্লেক্সের মাদ্রাসার ২৪৫ জন ছাত্র-শিক্ষক, রূপালি ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ টাকা গণনার কাজে অংশ নেন। ছাত্র-শিক্ষকরা টাকাগুলো মান অনুযায়ী আলাদা করেছেন। সেগুলি ব্যাংকের স্টাফরা আলাদা আলাদা বান্ডেল বেঁধেছেন। এরপর গণনা মেশিনে গণনা করে টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা রাখা হয়। সার্বিক তদারকি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৩০ জন সেনা সদস্য, ১৫ জন পুলিশ সদস্য ও ৯ জন আনসার সদস্য।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে প্রায় পৌনে দু’শ বছর আগে গড়ে ওঠা এই মসজিদে দেশ-বিদেশের নানা ধর্মের মানুষ অনুদান পাঠায়। প্রতি জুমার দিন দেশের নানা জেলার প্রচুর মানুষ এখানে নামাজ আদায় করে অনুদান দিয়ে যান। অনেকে মানি অর্ডারের মাধ্যমেও অনুদান পাঠান। এখানে দান করলে যে কোন মনোবাঞ্ছা পূরণ হয় বলে মানুষের বিশ্বাস। কেবল টাকা আর গহনা নয়, অনেকে হাঁসমুরগি, গবাদি পশু, দুধ, শাকসবজিও দান করে থাকেন। এগুলি প্রতিদিন নিলামে বিক্রি করে এসব টাকাও ব্যাংকে জমা রাখা হয়। দানের টাকার লভ্যাংশ থেকে মসজিদ কমপ্লেক্সের নানা রকম খরচ মিটিয়ে হতদরিদ্র মানুষদের নানা আপদ বিপদে সহায্যও করা হয়ে থাকে।

(এসএস/এএস/আগস্ট ১৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test