E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কোটা সংস্কার আন্দোলন 

ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলেন নিহত রাব্বি 

২০২৪ আগস্ট ১০ ১৭:২৩:২৬
ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলেন নিহত রাব্বি 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : বাবা রিকসা চালক। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশুনা করিয়েছেন। ছেলের স্বপ্ন ছিলো ইঞ্জিনিয়ার হবেন। তাই বাবা অনেক কষ্ট করে স্বপ্ন পূরণ করতে শরীয়তপুর পলিটেকনিক্যাল ইনিস্টিউটে ভর্তি করান ছেলে ইসমাইল হোসেন রাব্বিকে। ইঞ্জিনিয়র হয়ে রিক্সাচালক বাবাকে একটু শান্তি দেবেন। এই স্বপ্ন নিয়ে সামনের দিকে এগুতে থাকলেও কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণ দিতে হলো রাব্বিকে। 

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামের রিক্সা চালক মিরাজ তালুকদার ও পারভীন বেগমের ছেলে ইসমাইল হোসেন রাব্বি। দুই বোন ও ভাই ছিলেন রাব্বি একাই। সে ছিলেন সবার ছোট। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতম।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে রাব্বি শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন। ১৯ জুলাই ঢাকার শাহাবাগ এলাকায় আন্দোলনকারীদের সাথে রাব্বিও ছিলেন। আন্দোলনরত অবস্থায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রাব্বি মারা যান। পরে তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছিল।

এদিকে ছেলেকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খুজে বেড়িয়েছেন তার পরিবার। অবশেষে গত ৪ আগস্ট রাতে রাব্বির পরিবার জানতে পারেন রাব্বি মারা গেছে। তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। খবর পেয়ে ৫ আগস্ট ছেলের লাশ মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামে নিজ বাড়ি আনা হয়। পরে সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ছেলেকে হারিয়ে পুরো পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তারা কিছুতেই এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল হোসেন বলেন, অনেক কষ্ট করে রিক্সা চালক মিরাজ তালুকদার তার ছেলেকে শরীয়তপুর পলিটেকনিক্যাল ইনিস্টিটিউটে ভর্তি করেছিলেন। ছেলে ইঞ্জিনিয়র হবে। কষ্ট দুর হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেলো। এমন মৃত্যু আমরা আর চাই না।

নিহত রাব্বির বাবা মিরাজ তালুকদার বলেন, ১৯ জুলাই ছেলে আন্দোলনে যায়। এরপর তাকে খুঁজে পাইনি। পরে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকি। ৪ আগস্ট জানতে পারি আমার ছেলের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা লাশ নিয়ে বিচারের দাবীতে মিছিলও করেছে। পরে ৫ আগস্ট লাশ এনে বাড়ির পাশে দাফন করেছি। কি অপরাধ ছিলো আমার ছেলের? কেন তাকে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। এই মৃত্যু আমরা কিছুতেই মানতে পারছিনা।

(এএসএ/এসপি/আগস্ট ১০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২২ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test