E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ইছামতির বেড়িবাধে ধ্বস, জিও ব্যাগের রোল দিয়ে দায়িত্ব সারলেন পাউবো কর্মকর্তারা

২০২৪ জুলাই ২৫ ১৫:২১:২৯
ইছামতির বেড়িবাধে ধ্বস, জিও ব্যাগের রোল দিয়ে দায়িত্ব সারলেন পাউবো কর্মকর্তারা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সীমান্ত নদী ইছামতির সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের শুইলপুর শ্মশানঘাট নামকস্থানে তিন নং পোল্ডারে বেড়িবাধে ধ্বসের ৩০ মিটার জিও ব্যাগের রোল দিয়ে ঢেকে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ফাটল দেখা  দেওয়া ২৪০ মিটার বেড়িবাধ কোদাল দিয়ে কুপিয়ে সমান করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই এলাকার মানুষজন প্রতি মুহুর্তে নতুন করে ভাঙন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

শুইলপুর গ্রামের কিনু গাজীর ছেলে দিনমজুর আকবর আলী গাজী জানান, বসন্তপুর খাদ্য গুদাম থেকে শুইলপুর হয়ে খাঞ্জিয়া বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত ইছামতি নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা। এ সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার বোলতলা ও মাহমুদপুর। কয়েক বছর আগে থেকে ভাঙন কবলিত এলাকার পাশে নদীতে সরকারিভাবে বালি কাটতে অনুমতি দেওয়ায় বসন্তপুর খাদ্য গুদামের পার্শ্ববর্তী এলাকা ও খাঞ্জিয়া এলাকায় নদীভাঙন দেখা দেয়। যার প্রভাবে সীমান্তবর্তী কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জনের কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। অপরদিকে ভারতের পারে চর জেগে ওঠায় বাংলাদেশের মানচিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। ভাঙনের ধারাবাহিকতায় গত ১২ জুলাই শুক্রবার দুপুরে শুইলপুর শ্মশানঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধের ৩০ মিটার জুড়ে নদীতে ধ্বসে যায়। ধ্বসের প্রভাবে ২৪০ মিটার জুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। ১২ জুলাই ভোর থেকে টানা বৃষ্টির কারণে এ ধ্বস সৃষ্টি হয়।

শুইলপুর গ্রামের সিরাজ গাজী ও মোহাম্মদ গাজী অভিযোগ করে বলেন, শ্মশানঘাট এর নিকটে তাদের চিংড়ি ঘের ও ফসলী জমী রয়েছে। তিন বছর আগে থেকে এখানে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন তারা। রাতের জোয়ারের সাথে বৃষ্টি নামলে তাদেরসহ এলাকার অনেকেরই ঘের ও ফসলী খেত ভেসে যাবে। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হবে। বেড়িবাঁধ ধ্বসের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়ী করে তারা বলেন, ওদের গায়ে গন্ডারের চামড়া। গালি কেন, মারলেও তাদের কিছু যায় আসে না। ভাঙন ও ফাটল দেখা দেওয়ার তিনদিন পর ধ্বস কবলিত বেড়িবাধ সরকারি জিও বাগের রোল দিয়ে ঢেকে দিয়ে ও ফাটল কবলিত ২৪০ মিটার বেড়িবাধ কোদাল দিয়ে কুপিয়ে সমান করে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে এর চেয়ে বেশি কিছু তাদের করার নেই বলে জানান সেকশান অফিসার মাসুদ রানা। এরপর থেকে সীমান্ত গ্রামবাসি নতুন করে ধ্বস ও ফাটকের আশঙ্কা নিয়ে দিন পার করছেন। বড় ধরণের জোয়ার ও মুষল ধারায় বৃষ্টি হলে ওই ধ্বস কবলিত জায়গা বৃদ্ধি পেয়ে ও ফাটল থেকে ভাঙন হয়ে নলতা ও ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভাড়াসিমলা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান নাহিদ জানান, শুইলপুর শ্মশানঘাট এলাকায় ১২ জুলাই ভোর থেকে টানা বৃষ্টিতে এ ধ্বস ও ফাটল দেখা দেয়। ওই দিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ধ্বস নামার বিষয়টি অবহিত করলেওাঁধ সংস্কারের জন্য বালি, বাঁশ, বল্লম ছাড়াও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে ১৪ জুলাই থেকে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করবেন বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানালেও ১৫ জুলাই তারা কেবলমাত্র জিও ব্যাগের রোল দিয়ে ধ্বস কবলিত ৩০ মিটার এলাকা ঢেকে দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছেন। এ ছাড়া ফাটল কবলিত ২৪০ মিটার জায়গা কোদাল দিয়ে চেঁচে ছুলে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর কালিগঞ্জের তিন নং পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা সেকশান অফিসার মাসুদ রানা বলেন, গত বছর থেকে শুইলপুর শ্মশানঘাট এলাকায় ফাটল সম্পর্কে তারা সচেতন ছিলেন। দ্রæত কাজ শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ১২ জুলাই ৩০ মিটার লম্বা জায়গা জুড়ে দেড়ফুট করে বেড়িবাধে ধ্বস নামায় ও দীর্ঘ এলাকায় ফাটল দেখা দেওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সংস্কার করার জন্য বালি, বল্লম ও বাঁশসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগাড় করা সম্ভব না হওয়ায় আপদকালিন ব্যবস্থা হিসেবে জিও ব্যাগের রোল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বর্ষা কেটে গেলে পূর্ণাঙ্গভাবে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।
করে রবিবার সকাল থেকে তারা কাজ শুরু করবেন।

(আরকে/এএস/জুলাই ২৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test