E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকের মুজুরির টাকা চেয়ারম্যানের পেটে? 

২০২৪ জুলাই ১১ ১৯:০৬:২৭
অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকের মুজুরির টাকা চেয়ারম্যানের পেটে? 

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : শ্রমিকের মুজুরির টাকা চেয়ারম্যানের পেটে, এ নিয়ে সমাজে নানা প্রশ্ন ওঠেছে। কেন্দুয়া উপজেলার ৯ নং নওপাড়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকের মুজুরির টাকা তাদেরকে না দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান কাউসার তার পকেটে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। ওই প্রকল্পে নিয়োজিত ১৮ জন শ্রমিক তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ১০ জুলাই বুধবার বিকেলে একসাথে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারা অভিযোগটির সুষ্ঠু তদন্ত ও চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করেন।

লিখিত অভিযোগকারী শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন নওপাড়া ইউনিয়নের গণিতাশ্রম গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সেলিম মিয়া, আব্দুল হেকিমের ছেলে রবিকুল, মতিউর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান, হাকিমুলের ছেলে সহিদ মিয়া , কাঞ্চন মিয়ার ছেলে শফিকুল, আলী হুসেনের ছেলে মেরাজ, বিকছানের ছেলে হলুদ, ফুলে হোসেনের ছেলে গোমরাজ, নওপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে সাদেক, সেলিমের ছেলে মিন্টু, হাবিবুর রহমানের ছেলে হক মিয়া, মুগদুম আলীর ছেলে রহিছ মিয়া, আব্দুল জব্বারের ছেলে সারিকুল, কুতুবপুর গ্রামের মত্তুজ আলীর ছেলে ইদ্রিস, মন্তুজির ছেলে এখলাছ, গণিতাশ্রম গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে ঝান্টু, শ্রীধরপুর গ্রামের হেমেন্দ্রর ছেলে সতেন্দ্র ও আলী উসমানের ছেলে নজরুল লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগকারী শ্রমিকদের দাবি, প্রায় আড়াই বছর যাবত তারা ৪০দিনের কর্মসূচি মাটি কাটা কাজের সাথে জড়িত আছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ মোট ১২৫ জন শ্রমিকের নামে বিল উত্তোলন করেন তিনি। বুধবার শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়া বলেন, আমরা ৩০ দিন কাজ করি কিন্তু চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান কাউসার আমাদের ন্যায্য মুজুরি না দিয়ে ১৫ দিনের টাকা দেন। বাকি টাকা চাইলে তিনি আমাদের কে অশ্লীল ভাষায় বকাবকি করেন। এছাড়া মাইরপিট করারও হুমকি দেন। আমরা যে সিম ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করি সেই সিম বদলিয়ে কারসাজি করে অন্য সিমে টাকা নিয়ে যায়। কুরবানি ঈদের আগে এবং ঈদের পরে আমাদের নামে দুটি বিলের সাকুল্য টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করেন। গত ০৯ জুলাই সকাল ১১ টায় আমাদের টাকা চাইলে চেয়ারম্যানসহ তার সাঙ্গুপাঙ্গুরা আমাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে আমাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ঘাড় ধাক্ষা দিয়ে বের করে দেন। এবার আমাদেরকে আর কোন টাকাই দেননি। আমরা এর বিচার চাই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান কাউসার বলেন, শ্রমিদের টাকা অন্যকেউ উত্তোলন করে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। ভোটার আইডি কার্ডের সাথে মোবাইল নাম্বার সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যেসব শ্রমিকরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার পরিচয়ে শ্রমিকের খাতায় নাম লিখিয়েছেন মূলত তারা শ্রমিক নন কিংবা তারা কোনদিন কাজও করেন না। সুতরাং যারা কাজ করেন না তাদেরকে আমি শুধু শুধু সরকারের টাকা কেন দিতে যাবো? যারা কাজ করেছেন আমি তাদের মুঞ্জুরির জন্যই বিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন শাখায় জমা দিয়েছি। যাদের বিল জমা দিয়েছি তারাই বিলের টাকা পেয়েছেন। লিখিত অভিযোগ দাখিলের পর বিষয়টি গণমাধ্যমে জানাজানি হলে, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার অসুস্থতা জনিত কারণে ছুটিতে থাকলেও কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসন মিডিয়া সেলে ১০ জুলাই রাতে তিনি লিখিত ভাবে জানান, আমার দপ্তরে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে, আমি অসুস্থতা জনিত কারণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। আমি কর্মস্থলে যোগদান করে বিষয়টি কথিয়ে দেখব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(বিএস/এসপি/জুলাই ১১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test