E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

আদমদীঘির ইউএনওর কান্ড: সরকারি মুঠোফোনে ব্ল্যাকলিস্টে সাংবাদিকদের নাম্বার

২০২৪ জুলাই ০৮ ১৭:৩৫:৪৭
আদমদীঘির ইউএনওর কান্ড: সরকারি মুঠোফোনে ব্ল্যাকলিস্টে সাংবাদিকদের নাম্বার

আদমদীঘি প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণমাধ্যম কর্মীদের নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে রেখেছেন। অভিযোগ ইউএনও রুমানা আফরোজের বিরুদ্ধে অনিয়মের নিউজ করায় তিনি সরকারি নির্দিষ্ট মুঠোফোন নাম্বারে ব্ল্যাকলিস্টে রাখেন কর্মরত একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর মুঠোফোন নাম্বার। আর এতে করে কোনো তথ্যের জন্য সরকারি ওই মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে বারবার ব্যস্ত দেখায়। ফলে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ও পেশায় বাধাগ্রস্ত সৃষ্টি হতে হচ্ছে ভূক্তভোগী গণমাধ্যমকর্মীদের। এদিকে ইউএনও’র সরকারি নাম্বারে ব্ল্যালিস্টের এমন কর্মকান্ডকে বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করছেন অনেকে।

জানা যায়, রুমানা আফরোজ নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় অনিয়ম করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠে। সেই অভিযোগের সূত্রে কিছু অনিয়মের তথ্য হাতে আসে গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে। তবে অনিয়মের তথ্য যখন হাতে আসে তখন তিনি বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলা হিসেবে বদলী হয়ে আসেন। এরপর অনিয়মের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেন একাধিক সাংবাদিক। বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তার বিরুদ্ধে তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর জনসাধারণের কাছে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এতেকরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে। যার ফলে তাঁর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট জবাবদিহিতা করতে হয়। একারণে ওই সকল গণমাধ্যম কর্মীদের উপর চরম রাগান্বিত হয়ে পড়েন৷ বিষয়টি গত চার মাস আগের হলেও তিনি ক্ষোভ পুষে রাখেন। আর তখন থেকেই সরকারি মুঠোফোন নাম্বারের ব্ল্যাকলিস্টে রাখেন একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর মুঠোফোন নাম্বার। যা একটি ক্ষমতার অপব্যবহারের সামিল ও অযৌক্তিক।

অপরদিকে, আস্তে আস্তে যোগাযোগের সমস্ত মাধ্যম WhatsApp. Facebook, imo থেকে ব্লক করে দেন। এতে ওই গণমাধ্যম কর্মীর কোনো তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে ইউএনও'র সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক মাস যোগাযোগ থেকে বিরত থাকেন। যার কারণে অনেক সংবাদে তাঁর মন্তব্য না পাওয়ায় প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি ৷ ফলে গণমাধ্যম কর্মীরা তাদের পেশায় বাধার সম্মুখীনে পড়তে হচ্ছে।

একাধিক গণমাধ্যম কর্মী জানান, কয়েকমাস আগে ইউএনও রুমানা আফরোজের সাবেক কর্মস্থল নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের ঘর নির্মাণের টাকা, নজিপুর কলেজ ফান্ডের টাকা, সিসিটিভি ক্যামেরা, পুকুরের মাছ এসব অনিয়মের বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ১মাস তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা হয়নি। পরবর্তীতে কয়েকটি তথ্যের জন্য যোগাযোগ করলে তাঁর ব্যবহৃত সরকারি মুঠোফোনে কল দিলে ব্যস্ত দেখায। এরপর মাঝে মধ্যে ফোন দিয়ে দেখি একই অবস্থা। তখন কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে জানা যায় নাম্বারটা ব্ল্যাকলিস্টে রেখেছেন তিনি। অনলাইনে যোগাযোগ করা হলে WhatsApp. Facebook, imo থেকে ব্লক করে রাখেন।

তারা বলেন, সাংবাদিকতা পেশার লোকজনদের সঙ্গে অপমানজনক একটি কাজ করেছেন তিনি। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে তাঁর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দিবো।

স্থানীয় নাগরিক জামাদুল ইসলাম জানান, একজন সাংবাদিক সরকারি বেসরকারিসহ সকল জায়গার তথ্য সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশ করা তাদের নৈতিক অধিকার। সেটা হোক অনিয়মের। তাছাড়া সরকার থেকে ইউএনও'র একটা নাম্বার দেওয়া হয়েছে জনসাধারণের সুবিধার জন্য। যে নাম্বারে শুধু সাংবাদিক নয় সকল নাগরিকের ফোন দেওয়ার অধিকার রয়েছে। কারও বিরুদ্ধে নিউজ করলে রেগে গিয়ে সেই সাংবাদিকদের নাম্বার ব্ল্যাকলিস্টে রাখবে এটা কোনো আইনের মধ্যে পড়েনা বলে মনে করি। ব্যক্তিগত নাম্বার হলে তাও হতো। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।

জানতে চাইলে বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না।

(এস/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test