E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন, মহাপ্রকল্পের আশায় এলাকাবাসী

২০২৪ জুলাই ০৫ ০০:০১:৩৮
পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন, মহাপ্রকল্পের আশায় এলাকাবাসী

রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পদ্মা নদীতে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। অতি বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। তার উপর পদ্মা পাড়ের মানুষের গলার কাঁটা হিসেবে রয়েছে মহা প্রকল্প।

সরকার মহা প্রকল্প গ্রহন করলে তিন ধাপে ব্যায় বৃদ্ধি পেলেও কাজ শুরু হয়নি এখনো।

জানা যায়, দৌলতদিয়া পাটুরিয়া ঘাটকে নদী রক্ষা বাধসহ আধুনিক নৌ-বন্দরের আওতায় আনতে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে আড়াই বছর আগে। অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি নৌ-বন্দরের জন্য প্রায় ত্রিশ একর জমি অধিগ্রহণ করে বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ। এবং জমির মালিকদের কোন নতুন ভবন করতে নিষেধ করা হয়। আড়াই বছর পার হলেও জমি অধিগ্রহণের টাকা দেওয়া হয় নি স্থানীয়দের পাশাপাশি নদী রক্ষা বাধ নির্মিত হয়নি এখনে। গত একদশকে এক চতুর্থাংশে ঘাট পদ্মার পেটে গেলেও আশ্বাস ছাড়া কোন কাজ হয়নি দৌলতদিয়া ঘাটে।

সরজমিনে দেখা যায়,১ নং ফেরিঘাটে ও লঞ্চ ঘাটের পাশেই নতুন পাড়া, দৌলতদিয়া ছয় ও সাত নম্বর ফেরিঘাটের মাঝে ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু ঘর বাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ জিওব্যাগ ফেললেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তাছাড়া জিওব্যাগ ফেলানো নিয়ে রয়েছে অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ।

ভুক্তভোগী ছলিম সাধু বলেন, বিআইডব্লিউটিএ অ্যাকওয়ার নিয়ে আমাদের প্রায় তিন বছর আগে একটি নোটিশ দেয়। আমাদের বাড়িঘর ভেঙে দেবে, গাছপালাসহ শুধু লিখে নিয়ে যায়; কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি। কর্তৃপক্ষ প্রতিবার বলে ঈদের পরে করব, ঈদের পরে করব। কিন্তু সরকার এ বিষয়টি নিয়ে কোনো মাথা ঘামাচ্ছে না। নদী ভেঙে আসছে, আমরা বাড়িঘর ভেঙে সরাতে পারছি না, গাছপালা কাটতে পারছি না, নতুন করে গাছপালা লাগানো এবং ঘরবাড়ি মেরামত করতেও পারছি না। এর মধ্যে কেউ ঘরবাড়ি বিক্রি করে চিকিৎসাও করতে পারছেন না। অ্যাকওয়ারের মধ্যে আমার একটি বাড়ি আছে।
বালুর ব্যবসা ছিল। বালুর ব্যবসা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। বাড়িঘরে থাকার মতো কোনো পরিবেশ নেই। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে অথচ মেরামতও করতে পারছি না।

মোঃ উজ্জল মন্ডল নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে আমরা কঠিন সমস্যার মধ্যে আছি। বন্দর করার জন্য আমাদের জমি অধিগ্রহণ করছে বিআইডব্লিউটিএ। আমাদের বাড়িঘর অবকাঠামো যা কিছু ছিল, তারা সিজার লিস্ট করছে। পর্যায়ক্রমে একাধিক নোটিশ দিছে আমাদের এবং রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল আমরা সেখানে গিয়েছি। আমাদের বলা হয়েছে আপনাদের ঘরদরজা জমিসহ সবকিছু দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নদীবন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্পটির জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়। এখানে আপনারা নতুন কিছু করতে পারবেন না। আপনাদের যা কিছু আছে, সেগুলোও নিতে পারবেন না। এখন আমাদের ঘর-দরজাগুলো ভেঙে যাচ্ছে। আমরা মেরামত করতে পারছি না। এককথায় মানবেতর জীবনযাপন করছি।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ রহমান মন্ডল জানান, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন বাসী চায় নদী শাসন।

ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়াধীন বলে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, এখানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট আধুনিকায়নের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। এটা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে গিয়েছে। পাস হলে ভুক্তভোগীদের টাকা পরিশোধ করে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।

বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, আমাদের ইনিশিয়ালি এটা প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট ছিল। কিন্তু এখন নতুন করে আবার সমীক্ষার প্রয়োজন। জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। জমি নেওয়ার আগে অবশ্যই ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

(একে/এএস/জুলাই ০৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test