E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

ফরিদপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মবিরতি অব্যাহত

২০২৪ জুলাই ০৪ ১৬:৫৭:২৩
ফরিদপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মবিরতি অব্যাহত

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের একাধিক দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরী বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই কর্ম বিরতির পালন করছেন তারা।

সোমবার (১ জুলাই) সকাল থেকে দেশের সবগুলো সমিতিতে একযোগে কর্মবিরতি পালন শুরু করে আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চতুর্থ দিনের মতো এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অনির্দিষ্টকালের এ কর্মবিরতির কারনে সারাদেশে বিদ্যুৎ সেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে, সারাদেশে সবগুলো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করলেও জরুরী বিদ্যুৎ সেবা চালু রয়েছে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক প্রায় ১২ কোটি। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড়বৃষ্টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়ে দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তারা ঈদ বোনাস পান না, একদিন অনুপস্থিত থাকলে বেতন কাটা যায়, তাদের কোন নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা নাই। কিন্তু সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) দ্বৈত নীতির কারনে ন্যায্য সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা এবং কর্মচারী। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ-পদবী, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। শুধু তাই নয় বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারনে গ্রাহকের হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেক শ্রমিক। বিতরন লাইনে ব্যবহৃত নিম্নমানের মালামালের জন্য উত্তম গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়না বলেও জানান তারা।

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের দাবিতে চলতি বছরের ০৫ই মে থেকে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এরপর ১০ মে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুরোধে সমস্যা সমাধানে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসবে বিদ্যুৎ বিভাগের এমন আশ্বাসে কাজে ফিরে যান তারা। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী দাবি দাওয়া উল্লেখ করে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩৭ হাজার ৫৪২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিআরইবিতে জমা দেয়া হয়। যেখানে বোর্ডের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়।

কিন্তু ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনায় বসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় নাই এবং সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাসপেন্ড, সংযুক্ত ও স্ট্যান্ড রিলিজ যারা আছে সবাইকে এক সপ্তাহের মধ্য অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও সাসপেন্ড দুইজন ও স্ট্যান্ড রিলিজ দুইজনকে অদ্যবধি অব্যাহতি দেওয়া হয় নাই। তাই আবারো বাধ্য হয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিপিড়ন ও শোষণ থেকে বাঁচতে পুণরায় কর্মবিরতিতে যেতে হলো।

সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত দুটি দাবি হলো ১। স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিনির্মানে আরইবি-পিবিএস একীভূত করণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। ২। ভবিষ্যত বিদ্যুত ব্যবস্থা সচল রাখতে এবং গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের জন্য সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলনরত কর্মচারী-কর্মকর্তাবৃন্দ।

(আরআর/এসপি/জুলাই ০৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test