E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

‘কঙ্কাল’ সড়ক

২০২৪ জুলাই ০৩ ১৭:৫৫:১৩
‘কঙ্কাল’ সড়ক

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : সড়কের বিটুমিন ও ইট উঠে কঙ্কালসার। পাকা রাস্তার অধিকাংশেরই অবস্থা খারাপ। তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বেশীরভাগ অংশ ভেঙেচুরে একাকার।  ফলে গাড়ি চলে হেলেদুলে। এতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। সড়কের মাঝখানে থাকা বড় বড় গর্তে পড়ে উল্টে যায় ইজিবাইকসহ ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন। উপায় না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ঝিনাইদহ সদরের হামদহ-টিকারী সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। সড়কে চলাচলকারীদের অভিযোগের অন্ত নেই। গ্রামীণ এ সড়কের 'মুমূর্ষু' পরিস্থিতি নিয়ে জনপ্রতিনিধির হৃদয়েও হচ্ছে রক্তক্ষরণ। 

সরেজমিন ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, হামদহ ইসলামপাড়া, গোবিন্দপুর, বালিয়াডাঙ্গা বাজার, মগরখালি এলাকায় সড়কের বিভিন্ন অংশে বিটুমিন, পাথর, ইটের খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় গর্ত ও খানাখন্দ। এ ছাড়াও হারাণঘাট, নারিকেলবাড়িয়া, কুশবাড়িয়া বাজার এলাকায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে তিন চাকার যানবাহন ইজিবাইক, মাহেন্দ্র্র, আলমসাধু থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল, প্রাভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবহন চলাচল করছে।

কুশবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা রহিম বলেন, 'এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। জরুরি রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে পড়তে হয় মহা বিপাকে। গত ডিসেম্বর মাসে আমার এক আত্মীয় অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাকে হাসপাতাল নেওয়ার জন্য আমরা রওয়ানা করি তবে পথিমধ্যে তিনি মারা যান।'

ঝিথোর গ্রামের কৃষক অমল কুমার বলেন, 'আমাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো বাজারে নিয়ে যেতে কষ্ট হয়। অনেক সময় যানবাহনে বেশি টাকা ভাড়া দিতে হয়। ফলে ফসলের বাজার মূল্য ভালো পেলেও আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হই।'

দোগাছী গ্রামের চা দোকানী আলী আকবর বলেন, 'বর্ষাকালে এই সড়কে দিয়ে চলাচল করা খুব কষ্টকর। সড়কের মধ্যে অনেক সময় গাড়ি উল্টে পড়ে। এতে ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।'

ভ্যানচালক করিম বলেন, 'ভাঙ্গা রাস্তার কারণে প্রায়দিনই ভ্যানের বল-বিয়ারিং,চাকা বাকা হয়ে যাওয়া সহ নানা সমস্যা হয়। এতে যা আয় করি তার বেশিরভাগ টাকায় ভ্যান ঠিক করতে খরচ হয়।'

স্থানীয় ঘোড়শাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভেজ মাসুদ লিলটন বলেন, 'প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে কালীচরণপুর, দোগাছি, ঘোড়শাল, সুরাট ও ফুরসন্ধি ইউনিয়নের হাজার হাজারো মানুষ চলাচল করে। বর্তমানে তারা চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। গতবছর এই সড়কের জন্য প্রকল্প পাশ হলেও অদৃশ্য কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তাই অনতিবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।'

এ বিষয়ে এলজিইডি বিভাগের সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব বলেন, 'আমাদের আওতাধীন ১৮ কিলোমিটার এ সড়কের মধ্যে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। ইতিমধ্যে এ সড়কের জন্য প্রকল্প পাশ হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত ঠিকাদার নিয়োগ করে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শুরু করা হবে।'

(এসআই/এসপি/জুলাই ০৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test