E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ও পালিয়ে বিয়ে

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ

২০২৪ জুন ২৭ ১৮:১৭:৩৪
গোপালগঞ্জে শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও পালিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন দুপুরে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সাগর বাড়ৈকে পাঠদান থেকে বিরত ও বিদ্যালয়ের বেতন ভাতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানগেছে, টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাগর বাড়ৈ তার এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ঈদের পরের দিন ওই ছাত্রীকে নিয়ে তিনি পালিয়ে যায়। গত ২৩ জুন ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। ঈদের ছুটি শেষে ২৬ জুন বিদ্যালয় খোলে। ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। তার অপসারনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ দেয়। তারা এসময় ক্লাস বর্জণের হুমকি দেয়। আজ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

আন্দোলনকারি ওই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থী দীপ্ত সেন, সোহাগ বালা বলে, শিক্ষক সাগর বাড়ৈ এই বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১০ দিন আগে ওই ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এর আগেও প্রাইভেট পাড়ানোর কথা বলে তার বিরুদ্ধে একাধিকবার ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব ও যৌন হয়রানীর অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে এলাকায় আলোচনা- সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আমরা যাদের পিতার আসনে বসিয়েছি তারা কিভাবে এ ধরনের কাজ করতে পারে? আমরা যার কাছে শিক্ষা নিবো নিতি যদি দুচরিত্রবান হন, আমরা বোনরা কোথায় নিরাপদ ? আমরা ওই শিক্ষকের অপসারন চাই।

অভিভাবক মহাদেব সেন বলেন, আমার সন্তানকে বিদ্যালয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকি। কিন্তু শিক্ষকদের এ ধরনের কার্যকলাপে আমরা উদ্বিগ্ন। ওই শিক্ষক কারণে বিদ্যালয় ও এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে থাকলে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয় পাঠাবো না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার বাড়ৈ বলেন, সাগর বাড়ৈ এনটিআরসির মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী যোগদান করেন। তিনি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে তাকতেন এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। এক বছর আগে তার বিরুদ্ধে এধরনের একটি অভিযোগ ওঠে। এবার তিনি ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছেন বলে শুনেছি। এর পর থেকে আমার সাথে আার কোন যোগাযোগ রাখেনি। গতাকল পাঁচটি শ্রনি থেকে শিক্ষার্থীরা তার অপসারের দাবিতে পৃথক ভাবে আবেদন করেছে। ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসলে তাকে ক্লাস করতে দেওয়া হয়নি। তিনি একটা ছুটির আবেদন দিয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। বৃহস্পতিবার আমরা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা করেছি। সভায় সাগর বাড়ৈকে পাঠদান ও বিদ্যালয়ের বেতন ভাতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সুশেন সেন বলেন, শিক্ষক সাগর বাড়ৈ এজই সাথে দুইটি অপরাধ করেছে। একটি হলো ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন অপরটি হলো বাল্য বিবাহ। আমরা নৈতিক ভাবে এ দায় এড়াতে পারিনা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।

এবিষয়ে শিক্ষক সাগর বাড়ৈকে তার মুঠোফোন বার বার কল দিলে তিনি তা রিসিভ করনি।

টুঙ্গিপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও মধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে এবিষয়ে কথা বলবো। একই সাথে কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন জনিত কারনে অভিযোগ উঠলে আমরা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবো।

(টিবি/এসপি/জুন ২৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test