E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অচলাবস্থা, দলিল সম্পাদন বন্ধ 

২০২৪ জুন ০৬ ১৮:১৫:২৬
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অচলাবস্থা, দলিল সম্পাদন বন্ধ 

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : সাব রেজিস্টি অফিসে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এতে দলিল সম্পাদন বন্ধ হয়ে গেছে। দলিল করতে আসা মানুষ দলিল না করেই ফিরে যাচ্ছেন। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। দ্রুত এটির সমাধানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

গত ১ মাস ধরে এ অবস্থা চলছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। প্রতিদিন এ অফিসে ৩০টি দালিল সম্পাদন হয়। সেই হিসাবে সপ্তাহে এ অফিস থেকে গড়ে ১৫০টি দলিল সম্পাদন হয়ে থাকে। কোটালীপাড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ১ মাস ধরে কোটালীপাড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতি সাব রেজিস্টারের অনিয়ম ও দূনীতির অভিযোগ এনে কর্মবিরতি করে আসছে।

বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দলিল সম্পাদন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন সাব রেজিষ্ট্রার। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা অনিয়ম ও দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনেছে বলে জানিয়েছেন সাব রেজিষ্ট্রার কাওসার খান।

সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খানের বদলীর দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ১ ঘণ্টা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কোটালীপাড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতি।

এ সময় কোটালীপাড়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সভাপতি আহম্মদ হোসেন চৌধূরী, সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সেন, ইউপি চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না, দলিল লেখক আব্দুল খালেক হাওলাদার, মনির শাহ, কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলীউজ্জামান জামির সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।

কোটালীপাড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আহম্মদ হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈধ কাগজপত্র থাকাও সত্ত্বেও সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার দলিল করেন না। তিনি আমাদের কাছে ঘুষ দাবি করেন। আমরা ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমাদের দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলির দাবিতে গত প্রায় মাসব্যাপী কর্মবিরতি পালন করে আসছি। আমাদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মানববন্ধন করলাম। তার বদলী না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।

কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউপি চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খানের ঘুষ দাবি ও নানা অনিয়মের কথা আমরা জানতে পেরেছি। তার এই ঘুষ দাবির কারণে কোটালীপাড়া দলিল লেখক সমিতি গত প্রায় এক মাস ধরে কর্মবিরতি পালন করছে। এতে করে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় অচল হয়ে পড়েছে। কোটালীপাড়ার হাজার হাজার জনগণ ভোগান্তীতে পড়েছেন। সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। দ্রুত এর একটি সমাধান হওয়া প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোটালীপাড়া উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক কর্মচারী জানান, সাব-রেজিস্ট্রার দুর্নীতি ও অনিয়ম করেন না। ঘুষ চান না। তিনি সঠিক কাগজপত্র থাকলে দলিল করে দেন। কিন্তু আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে দলিল লেখকরা কাগজপত্র কম থাকলেও দলিল করেত চান। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান বলেন, আমি কোন দলিল লেখকের কাছে ঘুষ দাবি করিনি। দলিল সম্পাদন করতে আমি তাদের কাছে জেনুইন পর্চা, ব্যাংক ড্রাফট, মিউটেশন সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়েছি। আমি ৩ মাস আগে এখানে যোগদানকরি। প্রথম দিন জেনুইন কাগজপত্র চাওয়ায় সমিতির সদস্যরা কর্মবিরতি পালন করেন। পরে জেনুইন কাগজপত্র ছাড়া আমি দলিল করিনি। এতে দলিল লেখকরা সুবিধা পাচ্ছে না। তাই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ এনেছেন। আমি সরকারি চাকরি করি। কর্তৃপক্ষ আমাকে যেখানে দেবে, সেখানেই আমি সততার সাথে সার্ভিস রুল মেনে চাকরি করব।

গোপালগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার একেএম রফিকুল কাদির বলেন, দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কথা আমি জেনেছি। রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।

(টিবি/এসপি/জুন ০৬, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test