E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

রিমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত সেতু

২ উপজেলার ৫০ হাজার মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ 

২০২৪ মে ৩১ ১৭:৫২:৫৮
২ উপজেলার ৫০ হাজার মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ 

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে গোপালগঞ্জে একটি সেতু বিধ্বস্ত হয়েছে। গত সোমবার (২৭ মে) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম-সিলনা সড়কে সিলনা বাজার সংলগ্ন শির খালে নির্মিত একটি সেতু ভেঙ্গে পড়ে। এতে গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার একটি অংশের ৫০ হাজার মানুষকে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্চে। বিশাল জনগোষ্ঠিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যতায়াত করতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই ব্যয় হচ্ছে। দ্রুত সেতুটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিলনা বাজার সংলগ্ন শির খালে উপর নির্মিত সেতুটি গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার একাংশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এ ব্রিজ দিয়ে ২ উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, ১৯৯৪ সালে ২৭ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটার প্রস্থের এ সেতু নির্মাণ করা হয়। পরে ২০২৩ সালে এপ্রিল মাসে ১২ লাখ ৯৮ হাজার ব্যায়ে সেতুটি করা হয় সংস্কার। কিন্তু সোমবার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে সেতুর পাশের একটি গাছ উপড়ে মাটি সরে যায়। এছাড়া খালের পানির তীব্র স্রোতে সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে। দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার ৫০ হাজার মানুষ।

সড়কটি দিয়ে গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়ার উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জেলা শহর, কোটালীপাড়া. টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সদরসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে যাতায়াত করে থাকেন। সেতুটি ভেঙ্গে পাড়ায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। ফলে ওই এলাকার পণ্য পরিবহ ও যাতায়াতে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটর পথ বেশি ঘুরতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই ব্যয় হচ্ছে।

চলাচলকারী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের আকবর শেখ বলেন, প্রতিদিন আমি এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করি। কিন্তু গত সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে সেতুটি ভেঙ্গে গেছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। অতি প্রয়োজনে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এ ভাঙ্গা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। দ্রুত সেতুটি নির্মাণের দাবি জানাই।

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ বালা বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে গেছে। তাই ৮টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হয়েছে। এমনিক এখান দিয়ে কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাটবাজার সহ জরুরী কাজে ১০ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

চলাচলকারী শ্যামল কান্তি বিশ্বাস বলেন, গোপালগঞ্জ সদর ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাসিন্দারা এ সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। প্রতিদিন অর্ধ লাখের বেশি মানুষ এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু ৪ দিন পার হলেও যাতায়াতের কোন বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি। এতে আমারা চরম দূর্ভোগে পড়েছি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন বলেন, ‘রিমালের আঘাতে গোপালগঞ্জে কিছু ক্ষতি হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদরের বেদগ্রাম থেকে টুঙ্গিপাড়ার বর্ণি ইউনিয়নের সংযোগ সড়কের এলজিইডি নির্মিত একটি সেতুটি ভেঙে পড়েছে। এ কারণে গোপালগঞ্জ এবং টুঙ্গিপাড়ার একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ওই স্থানে সেতু পুনর্নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গোপালগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহামুদ হাসান বলেন, গোপালগঞ্জ সদরের বেদগ্রাম-সিলনা সড়কের একটি সেতু বিধ্বস্ত হয়েছে। এ কারণে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। দুর্ভোগ লাঘবে এলজিইডি থেকে একটি বেইলি ব্রিজ অথবা টেম্পোরারি ব্যাম্বো ব্রিজ করে দেওয়া হবে, যাতে মানুষ এবং হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

(টিবি/এসপি/মে ৩১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test