E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ছাত্র ও তার পরিবারের ৪ জনকে মারধর, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৮:৩৬:৪৬
ছাত্র ও তার পরিবারের ৪ জনকে মারধর, মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার

মাদারীপুর প্রতিনিধি : শ্রেণিকক্ষে দুষ্টুমি করায় মাদ্রাসাছাত্র আবির মৃধাকে (১২) বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামান। ঐ শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে মাদ্রাসায় যান। এসময় মাদ্রাসার শিক্ষক তার লোকজন নিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে ছাত্রের পরিবারের ৪ সদস্যকে মারধর করেছে। পরে ত্রিপল নাইনে কল পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। 

রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজপাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামানের বাড়ি বাগেরহাটের রামপালে। একবছর আগে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। রাতেই তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

আহতরা হলেন মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকার জামাল মৃধা (৪৬), তার ছেলে আবির মৃধা (১২), একই এলাকার খলিল মৃধার ছেলে নাইম মৃধা (২২), বজলু হাওলাদারের ছেলে ফরিদ হাওলাদার (২৭), করদি গ্রামের এনতাজউদ্দিন সরদারের ছেলে শহীদ সরদার (৪৮)।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুুপুরে বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি করে মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকার আবির। বিষয়টিতে ক্ষিপ্ত হয়ে যান ডাসার উপজেলার পশ্চিম মাইজপাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামান (৪২)।

পরে দুই শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী আবিরের হাত পা চেপে ধরে বেত দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করে। এসময় আবির ভয় পেয়ে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। বিষয়টি জানতে বিকেলে মাদ্রাসায় যান আবিরের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তাদের একটি রুমের ভেতর আটকিয়ে রাখা হয়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের নেতৃত্বে তার লোকজন মিলে আবিরের বাবাসহ ৪ জনকে মারধর করা হয়। জরুরি সেবা ত্রিপল নাইনে কল পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ঐ শিক্ষার্থীসহ ৫ জনকে ভর্তি করা হয়।

আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। এই ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনের নামে মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবার। পরে অভিযান চালিয়ে রবিবার রাতেই মূল অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আহত আবির মৃধা বলেন, আমাকে বড়হুজুর (মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক) মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। পরে ভয়ে আমি একা বাড়িতে চলে আসি।

আহত শিক্ষার্থীর বাবা জামাল মৃধা বলেন, ছেলেকে মারধরের বিষয় জানতে মাদ্রাসায় যাই। এসময় মাদ্রাসার ঐ শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে তার লোকজন মিলে আমাদের মারধর করেছে। মাদ্রাসার একটি রুমের ভেতর আটকিয়ে রাখেন। পরে ৯৯৯-এ কল দিলে আমাদের সবাইকে পুলিশ উদ্ধার করে।

আহত আবিরের মা আয়েশা বেগম বলেন, আমার ছেলে ও আমাদের উপর হামলার ঘটনায় দোষীদের বিচার চাই। আমরা জানতে গেলে ১৫-২০ জন লোক একত্রে আমাদের উপর এই হামলা চালায়।

ঐ মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. আবু বক্কর বলেন, ঘটনার সময় আমি মাদ্রাসায় ছিলাম না। তাই এব্যাপারটি সর্ম্পকে আমি কিছু বলতে পারবো না।

ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসাছাত্রকে মারধরের ঘটনায় প্রধান আসামী ফকির মোক্তারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে।

(এএসএ/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test