E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বরগুনায় খুন করে আলামত গোপনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা

২০২৪ জানুয়ারি ১৭ ১৯:৫২:৫৫
বরগুনায় খুন করে আলামত গোপনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা

মোঃ শাজনুস শরীফ, বরগুনা : খুন করে আলামত গোপনসহ দুষ্কর্মের সহায়তার অভিযোগে মিজানুর রহমান মিজান নামের এক ইউপি  চেয়ারম্যান ও তার পরিষদের এক ইউপি সদস্যসহ মোট আট জনকে আসামি করে বামনা থানায় মামলা করেছেন মামলার বাদী ছগীর হাওলাদার। মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুষার কুমার মন্ডল।

মামলার আসামীরা হলেন ডৌয়াতলা বাজারের দক্ষিন পার্শ্বে নিবন্ধনহীন সুন্দরবন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক ডাক্তার সবুজ কুমার দাস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ৪ নম্বর ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম, সুন্দরবন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান, বামনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৪ নম্বর ডৌয়াতলা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, দক্ষিণ গুদিঘাটা গ্রামের মৃত খালেক হাওলাদারের ছেলে মনিরুল ইসলাম, দক্ষিণ কাকচিড়া গ্রামের আনসার আলী খানের ছেলে মাঈনুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ কলেজ মোড় এলাকার সামসুল আলমের ছেলে রফিকুল ইসলাম, সুন্দরবন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবিকা উর্মি ও মুন্নী।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার ৪ নম্বর ডৌয়াতলা ইউনিয়নে ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর গুদিঘাট গ্রামের মৃত আবদুল হালিম হাওলাদারের ছেলে ছগীর হাওলাদার বাদী হয়ে ৩০২/২০১/১০৯, পেনাল কোড ১৮৬০, খুন করে আলামত গোপনসহ দুষ্কর্মের সহয়তার অপরাধের অভিযোগ এনে আসামীদের বিরুদ্ধে বামনা থানায় ৭/৬নম্বর মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ছগীর হাওলাদার উল্লেখ করেন, গত ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে ডৌয়াতলা বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে সুন্দরবন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিকে বিশ হাজার টাকা চুক্তিতে ছগীর হোসেনের মেয়ে মেঘলার সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নিয়ে গেলে অভিজ্ঞ সার্জন দ্বারা অপারেশন করার আশ্বাস দেয়। মেয়ে মেঘলার স্বামী তারেক ক্লিনিকের নিয়মানুযায়ী চুক্তির অর্ধেক দশ হাজার টাকা অগ্রিম জমা করে।পরে মামলায় উল্লেখিত ১নং আসামী ডাক্তার সবুজ কুমার দাস পরিক্ষা নিরীক্ষা শেষে কোন অভিজ্ঞ সার্জন ছাড়াই কয়েকজন অদক্ষ সহকর্মীদের নিয়ে অপারেশন করে মেয়ে মেঘলা ও তার নবজাতক শিশুকে অপারেশন টেবিলেই মেরে ফেলে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ করে রাখে। দীর্ঘসময় পরে মামলার বাদী ছগীর হোসেনের সন্দেহের সৃষ্টি হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে রোগীর খবর জানতে চাইলে রোগীর অপারেশনের কাজ চলছে বলে জানায় তারা। প্রায় আড়াই ঘন্টা পরে ছগীর হোসেন ডাক চিৎকার দিলে মৃত নবজাতক কে আবার তার মায়ের পেটের মধ্যে রেখে সেলাই করে কসটেপ দিয়ে ওইদিন রাত ১১টার দিকে রোগীর হার্টবিট বেরে যাওয়ার কথা বলে রোগীকে জরুরী বরিশালে নিয়ে যেত বলে। বরিশালে যাওয়ার পথে মেয়ে মেঘলার সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে পথিমধ্যে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়ে মেঘলা দেড় থেকে দুই ঘন্টা আগেই মারা যাওয়ার কথা নিশ্চিত করে।

মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামীরা আত্মগোপনে থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুষার কুমার মন্ডল মোবাইল ফোনে মামলা গ্রহনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের সকল আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, লাশ পোসমার্টেম করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তবে এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ১৫ জানুয়ারি রাতে সুন্দরবন হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসূতির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে ১৬ জানুয়ারী বরগুনা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ ফজলুল হকের নির্দেশে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বামনা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নিবন্ধনহীন ওই ক্লিনিক সিলগালা করেন।

(এসএস/এএস/জানুয়ারি ১৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test