E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

খাল থেকে মাটি তুলে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা নির্মাণ! 

২০২২ এপ্রিল ২১ ১৬:৪০:২৯
খাল থেকে মাটি তুলে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা নির্মাণ! 

তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : সরকারি খাল পাড়ে রাস্তার দু’পাশে মাটির স্তুপ। দেখে যে কারও মনে হবে ভেকু দিয়ে খাল খনন করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। রাস্তা নির্মাণের জন্য রাস্তা ঘেঁষে খাল থেকে মাটি তুলে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এই মাটি দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তার কাজ করা হচ্ছে খাল পাড়ে।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বেথুড়ী ইউনিয়নের বিদ্যাধর এলাকায় এলজিইডির রাস্তা নির্মাণের জন্য খাল থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। খাল থেকে খাড়াখাড়ি ভাবে মাটি তুলছেন ঠিকাদারের লোকজন। খালে কোন রকম প্যালাসেটিংস দেয়া হয়নি। খাল থেকে মাটি তুলে সেই মাটি দিয়েই রাস্তার সোল্ডার বেঁধে দেয়া হচ্ছে। এতে বর্ষাকালে অতি বৃষ্টিতে এ রাস্তা খালের মধ্যে ধসে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে কাশিয়ানী উপজেলার দেবাশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় কাজটি বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদার্স।

বিদ্যাধর গ্রামের বাসিন্দা হানিফ উদ্দিন খসরু বলেন, ‘ঠিকাদার রাস্তার পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল থেকে ভেকু দিয়ে মাটি তুলে রাস্তায় দিচ্ছেন। এতে রাস্তা ধসে আবার খালের মধ্যে চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। আমরা ঠিকাদারের লোকজনকে রাস্তা সংলগ্ন খাল থেকে মাটি তুলতে নিষেধ করলেও তারা তা শুনছেন না ।’

ওই গ্রামের মো. মাসুম আলী খান বলেন, ‘রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও অযত্নে পড়ে ছিলো। এ সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। নতুন করে রাস্তাটি নির্মিত হলে আমাদের চলাচল, পণ্যপরিবহন ও ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটবে। কিন্তু রোস্তা নির্মাণে রাস্তার ঠিক পূর্বপাশ ও পশ্চিমপাশের খাল থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। এখানে কোন প্রটেকশন ওয়াল রাখা হয়নি। তাই এই মুহুর্তে ভারি বর্ষণ হলেই রাস্তা খালের মধ্যে ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে।’

ওই সড়কের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদার্সের মো. মেহেদী হাসান খাল থেকে মাটি তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘খালের মাঝ থেকে মাটি তোলা হচ্ছে। রাস্তার কোল ঘেঁষে মাটি তোলা হচ্ছে না। এতে রাস্তার কোন ক্ষতি হওয়ার আশংকা নেই। মাটির জন্য যে টাকা বরাদ্দ, তাতে অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে কাজ করা সম্ভব নয়। এমনিতেই কাজটি করে অনেক লোকসান হচ্ছে। তাই খাল থেকে মাটি নিয়ে সহজে কাজ করা হচ্ছে।’

তদারকির দায়িত্বে থাকা কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। মাটির জন্য ঠিকাদারকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ কাজে খাল থেকে মাটি নেয়ার সুযোগ নেই। রাস্তা সংলগ্ন খাল থেকে মাটি তুললে তা বন্ধ করে দেয়া হবে।’

গোপালগঞ্জ পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান বলেন, এ ভাবে কাজ করা ঠিক হচ্ছেনা। প্যালাসেটিংস না দিয়ে এ ভাবে কাজ করলে রাস্তা ঝুঁকির মধ্যে পরবে। তারা আমাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে পারত। এতে এক সাথে খাল খনন ও রাস্তার কাজ করা সম্ভব হত। এখন ঠিকাদার মাটির জন্য টাকা বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কেন খাল থেকে মাটি নিচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।

(টিকেবি/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৩ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test