E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

তিস্তা নদীকে ঘিরে সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মত নগরী গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা সরকারের

২০২০ সেপ্টেম্বর ০৮ ০০:০৯:৩২
তিস্তা নদীকে ঘিরে সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মত নগরী গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা সরকারের

মানিক সরকার মানিক, রংপুর : মুজিববর্ষকে ঘিরে উত্তরের প্রাণ এবং বর্তমানে অভিশপ্ত এ অঞ্চলের তিস্তা নদী বেষ্ঠিত এলাকাকে সরকার সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের মত সুন্দর এক নগরী হিসেবে গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন সরকার। পরিকল্পনা মতে, প্রকল্পে রয়েছে, নদীর দুই পাড়ে ২২০ কিলোমিটার গাইড বাঁধ এবং বাঁধের দু’পাশে থাকবে সমুদ্রসৈকতের মত মেরিন ড্রাইভ; যাতে পর্যটকরা লং ড্রাইভে যেতে পারেন। 

এছাড়া সংরক্ষণ বাঁধের সড়ক দিয়ে পন্য পরিবহন করা হবে, নদীপাড়ের দুই ধারে গড়ে তোলা হবে হোটেল, মোটেল, রেস্তোরা ও পর্যটন নগরী। এতে করে রংপুর ও লালমণিরহাট পরিণত হবে আধুনিক এক শহর, নগর ও বন্দরে। এতে দেড়’শ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করা হবে এবং গড়ে উঠবে আধুনিক সেচ সেবা ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ কৃষি খামার এবং চালু হবে নৈৗপথ। সরকারের এই মহাপরিকল্পনার কথা সোমবার জানিয়েছেন ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ আন্দোলন কমিটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুরস্থ প্রধান প্রকৌশলী।

সরকারের এই মহাপরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং পূর্ণাঙ্গ একটি কমিটি পুনর্গঠনের মাধ্যমে দ্রুত তা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার রংপুরে এক পরামর্শ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ কমিটির উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন। দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের ছাদে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপত্বি করেন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হাক্কানী। শিক্ষক সমিতির নেতা শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনে বক্তব্য রাখেন, সিপিবির শাহাদাত হোসেন, জাসদের সাখাওয়াত রাংগা, ওয়াকার্স পার্টির অশোক সরকার, বাসদের আব্দুল কুদ্দুস, লালমণিরহাট জেলা জাসদের সাদেকুল ইসলাম, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রশীদ বাবু, সম্পাদক রফিক সরকার প্রমুখ।

ওই সভা এবং পাউবো’র প্রধান প্রকৌশলী সূত্রে জানা জানা যায়, তিস্তা পানি চুক্তির অভাবে তিস্তা নদী উত্তর জনপদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষাকালে দুই কূল প্লাবিত হয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় জনপদ। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার অবস্থার শিকার হতে হয় এ অঞ্চলবাসীকে। তিস্তা সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করলে ভারত এ প্রকল্পের ৬৫ কিলোমিটার উজানে গজলডোবায় একটি প্র্রকল্প তৈরী করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে পানির অভাবে মরুভূমিতে পরিণত হতে থাকে এ অঞ্চল। পানি চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারত বাংলাদেশের মাঝে কয়েকদফা বৈঠক হলেও সুষ্ঠু কোন সমাধান হয়নি আজো। আর এজন্যই এ অঞ্চলের কোটি মানুষকে বাঁচাতে বর্তমান সরকার এ প্রকল্প হাতে নেয়। এজন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কাছে অনুরোধ জানানো হয়।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। যার পুরোটাই বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন সরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভারতের সাথে তিস্তার পানি চুক্তির খুব একটা প্রয়োজন হবে না বলেও জানানো হয়। শুধু তাই নয়, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উত্তরের জেলা রংপুর, লালমণিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার আর্থিক সমৃদ্ধি স্থায়ী হবে পাল্টে যাবে উত্তরের জনজীবন। এখানে থাকবে না কোন বেকার সমস্যা। দেশ বিদেশের হাজার হাজার মানুষ এখানে আসবে কাজ করতে। শেষ হবে তিস্তাপাড়ের মানুষের দু:খের দিন, বন্ধ হবে এখানকার মানুষের কান্না।

সরকারের গৃহীত এ প্রকল্প বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুরস্থ প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ রায় প্রকল্পের সত্যতা স্বীকার করে জানান, করোনার কারণে এ প্রকল্পের কাজ আটকে আছে। অনেক আগেই এর কাজ শুরু হতো। তবে খুব শিগগিরই শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

(এম/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test