আহম্মদ ফিরোজ, ফরিদপুর থেকে : মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি থেকে দস্তরদিয়া পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের ১৬০টি পুরনো গাছ পানির দরে লোপাট করেছে ফরিদপুরের একটি বিশেষ চক্র। অন্তত তিন কোটি টাকার গাছ টেণ্ডার নাটক মঞ্চায়নের মাধ্যমে ফরিদপুর জেলা পরিষদ বিক্রি করেছে মাত্র ২৬ লাখ ৫ হাজার টাকায়।

অভিযোগ রয়েছে, ওই গাছগুলোর কাঠের পরিমাপ ও মূল্য নির্ধারণ কমিটি প্রভাবিত হয়ে তিন কোটি টাকার গাছের মূল্য নির্ধারণ করে দেন মাত্র ২৬ লাখ ৩৬৯০ টাকা।

মহাসড়ক অংশের ওই ১৬০টি গাছের মধ্যে মেহগনি ১৫৫টি, বাবলা ১টি ও রেইনট্রি কড়াই ৪টি। গত শতাব্দির ৬০ এর দশকে রোপন করা গাছের বেড় প্রায় ১০ ফুট থেকে ২০ ফুট। সর্বনিম্ন এক একটি গাছের মূল্য দেড় লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। গাছ চিড়াই করার পর এর মূল্য আরো বেড়ে যাবে। গত নভেম্বরে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উন্নয়নের গ্রাউন্ড দেখিয়ে ওই আঞ্চলিক মহাসড়কের গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়। ডিসেম্বরের ৪ তারিখ কাঠের পরিমাপ ও মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভা হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আব্দুর রশীদ। সদস্য ছিলেন ডিডি এলজি ড. আবু নাইম আব্দুস সবুর, বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন, আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল খায়ের। প্রভাবশালী চক্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই ১৬০টি গাছের মোট মূল্য নির্ধারণ হয় মাত্র ২৬ লাখ ৩৬৯০ টাকা পঞ্চাশ পয়সা। ওই মাসেরই ৬ তারিখ টেন্ডার আহ্বান করা হয় কালের কন্ঠ পত্রিকায়। ১২ জন ঠিকাদার এতে অংশ নেয়। ২৬ ডিসেম্বর টেন্ডার ওপেন করা হয়। ১ জানুয়ারি টেন্ডার কমিটির মিটিং হয়। ১২ ঠিকাদারের আপস রফায় মাত্র ২৬ লাখ ৫ হাজার টাকায় ওই গাছগুলো ক্রয় করেন ঠিকাদার শাজাহান আলরাজ। শাজাহান আলরাজ ফরিদপুর সদরের এক প্রভাবশালী নেতার ব্যক্তিগত সহকারি বলে জানায় ফরিদপুর জেলা পরিষদের একাধিক সূত্র। পরে ১৯ ডিসেম্বর বিভাগীয় কমিশনারের অনুমোদন পাওয়া যায়।

(এএফ/এএস/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭)