ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে যাওয়া মালামালের সাথে মন্ত্রীর ভাইয়ের দোহাই দিয়ে টেন্ডার হয়নি এমন প্রায় ২কোটি টাকার মালামাল অবৈধভাবে বিক্রি করে দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তারা।

জানা যায়,১৯৬২-৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত উত্তরাঞ্চলের প্রথম এবং ঐতিহ্যবাহী ঠাকুরগাঁও ডিজেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি খুচরা যন্ত্রাংশের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ায় ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বন্ধ হয়ে যায়। ১০ দশমিক ৫মে,ও উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন উক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় ৭টি জেনারেটর,একটি ওয়ার্কসপ এবং ভান্ডারে বিপুল পরিমান মালামাল ছিল। এ মালামালগুলো দীর্ঘ প্রকৃয়ার পর টেন্ডারের মাধ্যমে সেনা কল্যান সংস্থার নিকট বিক্রি করে দেয়া হয়। গত ১৬ নভেম্বর হতে ক্রেতাপক্ষ উক্ত মালামাল নেয়ার প্রকৃয়া শুরু করে এবং তা ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে।

উক্ত মালামাল নেয়ার সময় ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তারা অত্যন্ত সুকৌশলে ঢাকা থেকে আগত ডেলিভারি টিমের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একই ছাদের নিচে অবস্থিত চলতি বছর ৩০ জুনে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের একটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের সম্পূর্ণ মালামাল এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাইরে থাকা অপর আর একটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের সম্পূর্ণ মালামাল,১টি ৫এম ভি এ ট্রান্সফরমার,১টি ২.৫ এম ভি এ ট্রান্সফরমার দুই উপকেন্দ্র সংশষ্ট সকল প্যানেল বোর্ড, প্রায় ৪০০ ফুট এইচ টি ক্যবল, বিপুল পরিমাল এল টি ক্যাবল বিক্রি করে দেয়া হয়।

টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়া মালামালের তালিকায় ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কোন উপকেন্দ্রের মালামাল কিংবা ট্রান্সফরমারের নাম না থাকার পরেও কীভাবে কোন প্রকৃয়ায় এগুলো দেয়া হলো জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর মাহফুজুর রহমান বলেন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাম্পাসের ভেতরের সকল মালামাল টেন্ডার হয়েছে। মালামালের তালিকা দেখতে চাইলে তিনি বা ক্রেতাপক্ষের কোন প্রতিনিধি তালিকা দেখাতে পারেননি। এব্যাপারে ভান্ডার রক্ষক হাসান আলীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মালামাল দেয়া হয়েছে ,আমার কিছু করার নাই।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের শ্রমিক কর্মচারিদের সাথে কথা বললে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমরা বাধা দিয়েছিলাম কিন্তু কর্মকর্তারা আমাদের বলেছেন “মালামাল নিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রীর ভাই , এখানে কথা বলা যাবেনা”তারা আরও বলেন নির্বাহী প্রকৌশলী সাহেব নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত মালামাল নিয়ে যেতে বলেছেন।

ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কোন কর্মকর্তার সুপারিশ,উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশ , জরিপ,মূল্য নির্ধারণ,এমনকি বোর্ড সভায় অনুমোদন না হওয়ার পরেও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের দোহাই দিয়ে দিনে দুপুরে প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল টেন্ডার হয়ে যাওয়া মালামালের সাথে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এমন প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।



(জেআরটি/এস/জানুয়ারি ১৮,২০১৬)