বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালের আগৈলঝাড়ার দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত পূর্নিমার প্রকৌশলী হবার স্বপ্ন পূরণ হলোনা। এসএসসিতে ভাল ফলাফল ও ভাল কলেজে ভর্তি হতে না পেরে অবশেষে আত্মহত্যা করেছে মেধাবী ছাত্রী পূর্নিমা।

বিদ্যালয়, স্থানীয় ও পূর্নিমার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টেমার মালেকা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রী ছিল ওই গ্রামের দরিদ্র মঙ্গল বিশ্বাসের মেয়ে পূর্নিমা বিশ্বাস।
পূর্নিমা ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম স্থান অধিকার করে আসছিল। শিক্ষকরা জানান, তারা পূর্নিমাকে নিয়ে এসএসসিতে গাল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রত্যাশা করেছিল। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে পূর্নিমা ঢাকায় বুয়েটে লেখাপড়া করে প্রকৌশলী হওয়ার উচ্ছা প্রকাশ করেছিল।

২০১৫ সালের প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় পূর্নিমা ৪.৭৮ গ্রেড পাওয়ায় তার জীবনে হতাশা নেমে আসে। ভাল কলেজে ভর্তির আবেদনের সুযোগ না পেয়ে হতাশায় ভেঙ্গে পরে পূর্নিমা। তাই ভাল কলেজে ভর্তি হতে সুযোগ পেয়ে রবিবার নিজ ঘরে আড়ার সাথে পূর্নিমা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ঘরের লোকজন তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে আগৈলঝাড়া হাসপাতালে পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসারত অবস্থায় রবিবার রাতে পূর্নিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে।
বারডেম হাসপাতালের কর্মচারী পূর্নিমার বড় বোন মুক্তা বিশ্বাস জানান, অভাবের সংসারে পাঁচ বোনের মধ্যে পূর্নিমা ছিল চতুর্থ। তাকে নিয়ে তাদের পরিবারে অনেক আশা ছিল। কিন্তু ফলাফল বিপর্যয় ও দারিদ্রতার কারণে তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হলোনা।

এঘটনায় বরিশাল কোতয়ালী থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। রবিবার রাতেই পূর্নিমার লাশ এলাকায় পৌছলে পূর্নিমার শিক্ষক, সহপাঠিসহ স্বজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বর্তমানে টেমার এলাকায় চলছে শোকের মাতম। রবিবার রাতেই উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের টেমার গ্রামের নিজ বাড়িতে পূর্নিমার অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
(টিবি/পিবি/জুলাই ০৬,২০১৫)