কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গনে চরকাউয়া বাজার বিলীন
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নগর সংলগ্ম কীর্তনখোলা নদীর আকস্মিক ভাঙ্গনে পূর্ব প্রান্তের চরকাউয়া খেয়াঘাট ও ফেরীঘাটসহ বাজারের সিংহভাগ বিলীন হয়ে গেছে। এতোদিন পশ্চিম তীরের বেলতলা ও চরবাড়িয়া পয়েন্টে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোরে আকস্মিক ভাঙ্গন দেখা দেয় চরকাউয়া পয়েন্টে।
ভোর থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে খেয়াঘাট ও ফেরীঘাটসহ মুদি-মনোহারি, ওষুধের ফার্মেসী, কনফেকশনারী, কাঁচা তরকারীর দোকান, মাছের আড়ৎসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠা। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কমিউিনিটি ক্লিনিকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ফারুক মজুমদার জানান, ভোর ৫টার দিকে তিনি দোকানে ঘুমন্ত অবস্থায় কম্পন হচ্ছে বলে অনুভব করেন। ভয়ে তিনি দোকান থেকে বের হওয়া মাত্রই দেখতে পান তার দোকানসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
সেই থেকে একে একে দুপুর একটা পর্যন্ত ফারুক মজুমদার, হায়দার মজুমদার, রাজ্জাক মজুমদার, আমির হোসেন, হান্নান মজুমদার, পাবেল বেপারী, সাইফুল মজুমদার, পলাশ মজুমদার, সুলতান হাওলাদার, সোহেল রানা, তৈয়ব আলী, নূর আলম, হান্নান আলী, রিয়াজ খান, বশির হাওলাদার, বেল্লাল হোসেন, খাদেম আলী, আনোয়ার হোসেন, নান্নু মিয়া, রফিকুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, কাওসার হোসেন, খলিলুর রহমান, হাবিবুর রহমান, হিরা, আমানত আলী, বাদল মুন্সি ও আঃ রব হালাদারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সরিয়ে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি বলেন, ভোরে আকস্মিক ভাঙ্গনে কিছু বুঝে উঠার আগেই মূহুর্তের মধ্যে খেয়াখাটের পল্টুন, বাজার ও সড়কসহ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে দেবে গেছে। বাজারের দোকান রক্ষার চেষ্ঠা করার অনেকেই সুযোগ পাননি। যারা টের পেয়েছেন তারাও শেষ রক্ষা করতে পারেননি।
বাজার ও বাসস্ট্যান্ড নিয়ে পাকা সড়ক মুহুর্তের মধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন বরিশালে সদ্য যোগদানকারী জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান। তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তাকে জানিয়েছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে কীর্তনখোলার ভাঙনে উপজেলার চরবাড়িয়ার সড়ক ও বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। সহায়সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে বহু মানুষ। কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ ধারন করায় নদীর দুই তীরের বাসিন্দারা চরম উৎকন্ঠায় রয়েছেন।
(টিবি/এএস/জুলাই ০৩, ২০১৫)