সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :  সৌদি আরবের সানাইয়া মেডিকেল হাসপাতালের ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করার (১০৪) তিন মাস ১৪ দিন পরে জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরত এসে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভার বিজয়নগর গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের পুত্র খোরশেদ আলম (৫২)।

আশ্চার্য্য জনক ভাবে তার ফিরে আসার সংবাদে দুরদুরান্তের আত্মীয় স্বজন ছাড়াও এলাকার শত শত লোক প্রতিদিন তার সাথে স্বাক্ষাত করতে এসে ভিড় করে চলেছেন। হাসপাতালের হিমঘরের বরফের মধ্যে ১০৪ দিন মৃত লাশ হিসেবে পড়ে থাকার পরে অবিশ্বাস্য ভাবে বেঁছে উঠার মত ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
খোরশেদ আলমের বর্ণনা মতে গত ২০০১ সালের ২ অক্টোবর তিনি জীবিকার তাড়নায় সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে ছানাইয়া এলাকায় ছলে জাকির ওর্য়াকশফে চাকুরি নিয়ে পাড়ি জমান। ছালে জাকির নামক কফিল (মালিক) এর অধিনে তিনি পেইন্টার হিসেবে চাকুরি করে আসছিলেন। সেখানে তার অপর ছোট ভাই শাহজাহান ও চাকুরি করেন। এরমধ্যে বিভিন্ন সময়ে দুইবার ছুটিতে দেশে আসেন। গত প্রায় চার মাস আগে তিনি হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পোড়লে ছোট ভাই শাহজাহান সহ অপর সহ-কর্মীরা তাকে স্থানীয় সানাইয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা পরীক্ষা নিরিক্ষ করে খোরশেদ আলমকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যু সংবাদে পরিবার পরিজনের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। খোরশেদ আলমের লাশ হাসপাতালের হিমঘরে আরো প্রায় শতাধিক লাশের সাথে রাখা হয়, এর মধ্যে ফেনী জেলার জনৈক ব্যক্তির লাশও রাখা হয়। ছোট ভাই শাহজাহান খোরশেদের লাশ দেশে ফেরত আনার জন্য আনুষ্ঠাকি প্রকৃয়া শেষ কোরতে তিন মাস ১৪ দিন সময় ব্যয়হয়। এর মধ্যে ফেনীর জেলার মৃত ব্যাক্তির লাশ দেশে আনার প্রকৃয়া শেষ হলে কর্মচারীরা হিমঘরে প্রবেশ করে আশ্চার্য্য ভাবে লক্ষ করেন খোরশেদ আলমের শ্বাস প্রশ্বাস চলাচল করছে । এঘটনায় গোটা হাসপাতাল সহ পুরো দেশব্যাপি আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে কর্তৃপক্ষ খোরশেদ আলমের নিথর মৃত দেহ উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী ছোমুছি হাসপাতালে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার প্রায় এক মাস পরে তিনি ধীরেধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠেন। সোনাইমুড়ী বাজারের স্থানীয় ব্যাবসায়ী বাচ্চু মিয়া, ফজলুল হক ও একাধিক কৌতুহলী সংবাদকর্মীর সামনে তিনি এ প্রতিবেদককে জানায় দীর্ঘদিন হিমঘরে থাকার ফলে তার পেটে, বুকে সহ সমস্ত শরিরে বরফের দলা জমেযায়। এসকল বরফ অপসারণ কোরতে ছোমুছি হাসপাতালের ডাক্তাররা তার পেটে গলায় একাধিক অস্ত্রপচার কোরতে হয়েছে। যার চিহ্ন বিদ্যমান রয়েছে তার পেটে গলা সহ বিভিন্ন স্থানে। হাসপাতাল থেকে ছাড় পত্র প্রদানের পর তিনি গত ১৯ মার্চ বিমান যোগে ছোট ভাই শাহজাহান সহ বাংলাদেশে এসে পৌছেন। এসময় তার ভাই শাহজাহান ছোমুছি হাসপাতলের মোট ব্যায় ৮৬ হাজার রিয়াল পরিশোধ করেন। বর্তমানে তিনি শারিরিক ভাবে সুস্থ্য থাকলেও মাথা সহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা অনুভব করেন। খোরশেদ আলম দাবি করেন তার আশ্চর্য্য জনক ভাবে বেঁচে উঠার ঘটনাটি সৌদি আরবের টেলিভিশন ও সংবাদ পত্রে ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় ভাবে কর্মরত শত শত বাঙ্গালী ছাড়াও সে দেশের নাগরিক সহ হাজার হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ করছে।

(এনএইচ/পিবি/ এপ্রিল ২০,২০১৫)