শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, সোনারগাঁ : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম'র বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের দায়েরকৃত মামলায় নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম ওরফে গরু সিরাজ (৬০)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।বুধবার রাতে গ্রেপ্তারের পর সিরাজকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও উপজেলা এবং থানা বিএনপির বির্তকিত কমিটির নেতৃবৃন্দ তদবির চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রেপ্তারকৃত সিরাজকে আদালতে পাঠানোর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত বন্দর থানা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান বাদল ও নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফিরোজ,সাধারণ সম্পাদক রমজান সহ একাধিক বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় তদবিরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বুধবার রাতে কুড়িপাড়া ভাংতি এলাকার নিজ বাড়িতে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সিরাজ ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। 

গ্রেপ্তারের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজকে থানা থেকে ছেড়ে দিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু সহ বন্দর উপজেলা ও থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দের তদবিরের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেছেন মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই আব্দুল জলিল।

জানা গেছে, উপজেলার মুছাপুর ইউপির শাঁসনেরবাগ গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ায় গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর পিতা মতিউর রহমান বাদী হয়ে গত পহেলা অক্টোবর বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি মাকসুদ হোসেন ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভ সহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সিরাজুল ইসলামকে অজ্ঞাত নামা আসামি হিসাবে বুধবার রাতে নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ড ভাংতি এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজকে ছাড়িয়ে দিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান,সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ মোবাইল ফোনে চাপ সৃষ্টি করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানিয়েছেন। দলীয় প্রভাবে ফোনের চাপে থানা পুলিশ অনড় ও শক্ত অবস্থানে থাকলেও শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) সকাল থেকে সাখাওয়াত- টিপুর পকেটের বন্দর থানা বিএনপির সহ সভাপতি আসাদুজ্জামান বাদল ও নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফিরোজ ও সাধারণ সম্পাদক রমজান হোসেন সহ একাধিক নেতাকর্মীরা স্ব-শরীরে পুলিশের হাজত থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজকে ছাড়িয়ে নিতে প্রকাশ্যে থানায় দেখা গেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতাকে বিএনপির পদপদবির একাধিক নেতারা থানায় তদবির করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী পরিবার ও বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

(এসবি/এসপি/অক্টোবর ০৪, ২০২৪)