আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : মশলার মধ্যে আদা একটি গুরুত্বপূর্ন ও দামী উপাদান। বনজ গাছের নিচে অব্যবহৃত ভাবে পরে থাকা জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে এই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে আদা চাষ করা হচ্ছে বরিশালের গৌরনদীতে। 

উপজেলার আধুনা গ্রামে সরেজমিন দেখা গেছে, মেহগনি গাছের নিচে হাজার হাজার বস্তায় উকি দিচ্ছে তরতাজা আদাগাছ। এসব আদাগাছ পরিচর্যায় রয়েছেন দুইজন নারী ও একজন পুরুষ শ্রমিক। প্রতিটা গাছের গোড়ায় দেখা যাচ্ছে আদা। বস্তা পদ্ধতিতে আদাচাষ এলাকায় নতুন হলেও কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শে বর্ষার কাদা-পানির মধ্যে বস্তার মধ্যে বেড়ে ওঠছে আদাগাছ।

উপজেলার প্রত্যন্ত আধুনা গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ আল মাসুদ জানান, আমদানী নির্ভর যেসব কৃষি পণ্য রয়েছে সেই পণ্যগুলো যাতে দেশেই উৎপাদন করা যায়। সে আগ্রহটা আমার সব সময় ছিলো। বিশেষ করে প্রতিবছর আদা আমদানী করে দেশের প্রচুর পরিমাণ বৈদাশিক মুদ্রা খরচ হয় এবং দামও অনেক বেশি। তাই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা যাতে খরচ কম হয়। সেলক্ষে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছি। এই জিনিষটা বস্তাতে করে রোপন করলে ভাল একটা ফলন পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, বর্ষায় আদা চাষ করলে অনেক ক্ষতি হয়। যেকারনে কৃষকরা আদা চাষ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেনা। কিন্তু বস্তা পদ্ধতিতে আদাচাষ সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত। কারণ অতি বৃষ্টি, খড়াসহ যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হলে বস্তা দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যায়। ফলে আদা গাছ সুরক্ষিত থাকে। এ বছর ১৫ হাজার বস্তায় প্রাথমিক ভাবে আদাচাষের কথা জানিয়ে উদ্যোক্তা আল মাসুদ বলেন, প্রতিটা বস্তায় ৬০-৭০ টাকা করে খরচ হয়েছে। একেকটি বস্তায় আধা কেজি করে আদার ফলন হলেও খরচ বাদ দিয়ে লাভবান হওয়ার আশা করছি।

ওই গ্রামের নতুন কৃষি উদ্যোক্তা রাহাত হাওলাদার বলেন, বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। তাই প্রতিদিনই এখানে এসে চাষ পদ্ধতি শিখছি। আগামীতে নিজেরও অব্যবহৃত জমিতে আদা চাষ করবো।

উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, বস্তা পদ্ধতিতে আদাচাষে আলাদা করে জমির প্রয়োজন হয়না। গাছের নিচে বস্তা কিংবা নেট পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। এবছর একজন কৃষি উদ্যোক্তা পরিক্ষামূলক ভাবে আদা চাষ করেছেন। প্রতিনিয়ত তার আদা বাগানে গিয়ে চাষীকে পরামর্শ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এ চাষ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় আগামীতে এ উপজেলায় আদা চাষে অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ০৪, ২০২৪)