যশোরে নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ইলিশ
স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরের বাজারে আকার ভেদে ইলিশ মাছের কেজি দর নির্ধারিত হচ্ছে। নিন্ম আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে কেজি দরে ইলিশ বিক্রি হওয়াতে ইলিশ মাছ খেতে পারছেন না আনেকেই। বড় , মাঝারি ও ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে। এত বাড়তি দামে ইলিশ কিনে খেতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। এ নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
শনিবার সকালে শহরের বড় বাজার এলাকার মাছের মোকাম ঘুরে দেখা গেছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে ইলিশের দামের বিস্তর ফারাক। খুচরা বাজারে বাড়তি দামে ইলিশ মাছ কিনতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। আশা নিয়ে ইলিশ মাছ কিনতে এসে প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না তাদের। আবার প্রয়োজনীয় মাছ কিনতে এসে পরিমাণে কম মাছ কিনে ঘরে ফিরতে হচ্ছে।
কথা হয় শহরের বড় বাজার এলাকার জহুরুল ইসলামে এক একজন খুচরা মাছ বিক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, শনিবার মোকামে মাছ সরবরাহ তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে। ভারতে মাছ রপ্তানির প্রভাব পড়েছে বাজারে। কম মাছ আসাতে বাড়তি দামে তাদের মাছ ক্রয় করতে হয়েছে। বাড়তি দামে ক্রয় করা মাছ খুচরা বাজারে তুলনামূলক ভাবে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
আলিয়ার রহমান নামে অন্য একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, খুচরা বাজারে মাছের আকার ভেদে দাম নির্ধারিত হচ্ছে। প্রতিকেজি বড় আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে। আকারে মাঝারি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ১২শ টাকা কেজি দরে। সব চেয়ে ছোট আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
এই খুচরা মাছ বিক্রেতা আরও বলেন, এখন বাজারে ইলিশের চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে এক জন খুচরা ইলিশ মাছ বিক্রেতা প্রায় ৬০ কেজি মাছ বিক্রি করতে পারেন। সামনের দিন গুলোতে ইলিশের সরবরাহ কমতে পারে এবং দামও বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বড় বাজারের পাইকারি ইলিশ মাছ বিক্রেতা সোনালী ফিস নামে আড়ৎতের মালিক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, শনিবার সকালে আড়ৎতে বরিশার থেকে আসা ইলিশ চড়া দামে বিক্রি হয়েছে। সব চেয়ে বড় আকারের ইলিশ মাছ যার প্রতি পিচ ১ কেজি বা ১ কেজির বেশি ওজন তা ১ মণ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭২ হাজার টাকা। ২টোতে কেজি মাঝারি আকারের ইলিশ মাছ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৩৪ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ৪ থেকে ৫ পিসে কেজি ইলিশ মাছের মণ বিক্রি হয়েছে ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকা। ভারতে রপ্তানির পর যশোরের বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ কমেছে। সাথে সাথে সব ধরণের মাছের মণে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দাম বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন,বরিশাল ও চট্টগ্রাম এলাকা থেকে যশোরের বাজারে ইলিশ মাছ বেশি আসে। শনিবারের বাজারে তিনি ১০ মণ ইলিশ মাছ পাইকারি বিক্রি করেছেন।
বাজারে ইলিশ মাছ কিনতে আসা ঝুমঝুমপুর এলাকার আব্বাস আলী নামে এক বয়স্ক লোক বলেন, খবরে শুনছি বাজারে ইলিশ মাছের দাম এবছর কম। কিনতে এসে দেখছি মাছের দাম অনেক বেশি। দেশের মাছ দেশের মানুষ স্বস্তায় কিনে খেতে পারছে না। ৫শ টাকার মধ্যেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আকারে ছোট এই মাছ গুলোর স্বাদ কম, কাঁটাও বেশি থাকে।
ভেকুটিয়া এলাকা থেকে আসা রাজু আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বাজারে মাছের দাম অনেক বেশি। সব শ্রেণি পেশার মানুষ এত বেশি দামে ইলিশ মাছ কিনে খেতে পারবে না। দেশের মাছ দেশের অধিকাংশ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
(এসএমএ/এএস/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪)