মোহাম্মদ সজীব, ঢাকা : রাজধানীর হাজারীবাগের সিকদার মেডিকেলের ঢাল থেকে একটি সড়ক সোজা চলে টালি অফিস মোড় পর্যন্ত, সিকদার মেডিকেলের ঢাল থেকে শুরু করে। টালি অফিস মোড়ের উত্তর সাইটের সুলতানগঞ্জ এলাকার সরু রাস্তার দুই পাসে বিল্ডিং ঘেসে প্রতি শনিবার বসছে সাপ্তাহিক শনিবারের মেলা, যেটা শনির মেলা হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও সিকদার মেডিকেলে যাওয়া রোগী, এম্বুলেন্স সহ তৈরি হয় দীর্ঘ যানযট।চলাচলের ব্যাস্ততম সড়ক হওয়ায় প্রতি শনিবার অসংখ্য মানুষ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের আসা-যাওয়া এই সড়কে তৈরি হচ্ছে ভোগান্তি। রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাসা বাড়ির দেয়াল ঘেষে দুই পাশ দখল করে চলে সাপ্তাহিক শনির মেলার আয়োজন। এতে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তির। তবে এ ব্যাপারে নেই কোনো প্রশাসনিক অনুমতি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মোটা অংকে চাঁদা নিতেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে লাইনম্যান ইউসুফ ও সিয়াম চাঁদা কালেকশন করতেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বেড়েছে দোকানের পরিমান বলা হচ্ছে এখন কোনো চাঁদা ছাড়াই চলছে মেলার দোকান। ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে ঝাড়ু দেয়ার টাকা। মেলায় আসা একজন ব্যাবসায়ীর সাথে পরিচয় গোপন রেখে কথা বলে জানা যায়। কিছু ভ্যানের দোকান বাদ দিয়ে কৌশলে বড় দোকান থেকে গোপনীয় ভাবে চাঁদা নেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, চিপা রাস্তা হওয়াতে দোকানগুলো পুরো রাস্তা আটকে দিচ্ছে। মেলায় আসা মানুষের ভিড়ে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় পুরো সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো মানুষ। প্রধান সড়ক ব্লক (বন্ধ) করে এভাবে মেলার আয়োজন কোনোভাবেই মানা যায় না। চাইলেই বিকল্প জায়গায় মেলা করা সম্ভব;আমরা সব সময়ই এর প্রতিবাদ করে আসছি; কিন্তু কোনো কাজ হয় না।

আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সিকদার মেডিকেলের ঢাল থেকে সারি সারি অস্থায়ী দোকান। এরপর সড়কটি ধরে সামনে এগোলেই চোখে পড়ে বাসা বাড়ির গেটের দেয়াল ঘেষে মেলার বিশাল কর্মযজ্ঞ। সড়কের দুই পাশে বসানো হচ্ছে বিভিন্ন পণ্যের দোকান।

দেখা যায়, মেলা উপলক্ষে সড়কজুড়ে দোকানিদের কর্মব্যস্থতা। সড়কের দুই পাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি দোকান। এতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে সড়ক। রয়েছে বিছানার চাদর প্যান্ট শার্ট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসসহ, শিশুদের খেলনা, কাঠের আসবাব, হাঁড়ি-পাতিলসহ বিভিন্ন দোকান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, মেলার বিষয় আমাদের নজরে আছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে তথ্য নিচ্ছি, কারা চালাচ্ছে মূল কারা এবং কিভাবে চলছে, সেই খোঁজ খবরও নিচ্ছি। যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে মাইকিং করে আমাদের পক্ষ্য থেকে সর্তক করা হয়েছিল।

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর সরেজমিনে ওসিকে মেলা পরিদর্শনে গিয়ে দোকানিদের মৌখিকভাবে পরবর্তী যাতে আর তারা না আসে সেই বিষয়ে কঠোভাবে জানাতে দেখা যায়। এবং পরবর্তী যদি রাস্তা বন্ধ করে এরকম মেলার আয়োজন করে তবে তাদের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্তা নেয়ারও হুশিয়ারি দেন ওসি সাইফুল ইসলাম।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪)