রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে ফরিদপুর শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে ওই গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল ফরিদপুরীর  সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম।

অনুষ্ঠানে অন্যনের মধ্য উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির ফরিদপুর জেলা শাখার সহ সভাপতি মোহাম্মদ ওয়ালিউর রহমান রাসেল, মাওলানা শাহ মো. জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি খন্দকার ওয়াহিদুজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর ভাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান মাতুব্বর, যুগ্মসম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, ইসলামিক ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. রেজাওয়ান হোসাইন মল্লিক, জাতীয় ওলামা মাশায়েক আইম্মা পরিষদ ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সৈয়দ শামসুল হক, বাংলাদেশ কোরআন শিক্ষা বোর্ড ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব হাফেজ আব্দুস সালাম সাহেব, ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা আলহাজ্ব শামসুদ্দিন মাতুব্বর, ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. জাহিদ হাসান, ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান আরেফী, সহ সম্পাদক মাওলানা ইয়াকুব আলী, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশ ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হামিদ মাস্টার, জাতীয় শিক্ষক ফ্রম ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি ডা. মাওলানা আবু জাফর, ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর সদর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা আনোয়ারুল করিমসহ সংগঠনের ফরিদপুর জেলা শাখা ও অন্যান্য উপজেলার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

গণ সমাবেশে বক্তারা ছাত্র-জনতার গনবিপ্লবে সংগঠিত গণহত্যা দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের দাবি করেন। বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না।
তারা বলেন, বিগত সরকার মানুষের উপর যেভাবে অত্যাচর নিপীড়ন করেছেন তা এদেশের মানুষ কোনদিনও ভুলতে পারবেনা। আর তাই তার সহযোগীদের অবিলম্বে দেশের মাটিতে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একই সাথে দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি করেন তারা। বক্তারা সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান।

তারা আরো বলেন, ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলনের উদ্যোগে ইসলামি সমাজভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই ইসলামী রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বক্তারা আরো বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর হতে এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে স্বাধীনতা অর্জন করলেও আমাদের দেশে জনগণ তার অধিকার ও বাক স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছিলেন সরকারের পালাবদলের কারণে কিন্তু ছাত্র জনতা যে বিপ্লব ঘটিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ আজ নতুন করে স্বপ্ন দেখছে যে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর নতুন সম্ভাবনাময় এক বাংলাদেশের। গত ৫ আগস্টের সম্মিলিত তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বাক স্বাধীনতা সবই হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিগত সরকারের আমলে জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন ও অর্থ পাচার এর মাধ্যমেই তারা বিভিন্ন প্রকার অপকর্মে লিপ্ত ছিল। ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করলে জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন হবে না, আমাদের নারীরা অবাধে ধর্ষণ হবে না এবং অবৈধভাবে সম্পদ বিদেশে পাচার সম্ভব হবে না বলে ব্যক্ত করেন। ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করলে দেশে সুশাসন ও সুষম অর্থ বন্টনের মাধ্যমে সকলকে প্রতিষ্ঠিত করা হবে। আজকে গরিবরা ধনী ও ধনীরা গরিব হয়ে যাচ্ছে শুধু মাত্র যারা রাষ্ট্র পরিচালনা ভুলভাবে করেছেন তাদের কারণে আমাদের এই দুর্দশা যদি ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করা যায় তাহলে আর এই ধরনের বিপর্যয় ঘটবে না। অবৈধভাবে বিগত সরকার ক্ষমতায় থেকে জনগণের সম্পদ, ইজ্জত এবং সর্বোপরি একটি অবৈধ রাষ্ট্র কায়েম করেছিলেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যারা ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের সম্পদ লুটকারী, নারী নির্যাতনকারী, বাকস্বাধীনতা হরণকারী, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারী, চাঁদাবাজ ধারী এবং অর্থ পাচারকারীদেরকে আমরা আর কখনো ভোট দিব না।

পরিশেষে জনগণের কল্যাণ কামনা করে বিশেষ ‌দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

(আরআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪)