স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংবিধান সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার জন্য আগে মানুষের কাছে জানতে হবে, তারা কী রকম পরিবর্তন চায়। সংবিধানের আমূল পরিবর্তন বা নতুন সংবিধান করতে হলে আগে গণপরিষদ করতে হবে। গণপরিষদ তৈরি না হলে পরিবর্তন করবে কীভাবে?

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক অস্থিরতার ঘটনা অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনার সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত আছে। একদিকে শূন্যতার সুযোগ নেওয়া, অন্যদিকে মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে আশপাশের অঞ্চলের আন্তর্জাতিক রাজনীতি করণের বাইরেও বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলা, প্রতিবিপ্লব ঘটাতে এসব ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকারে রাজনৈতিক নেতৃত্ব না থাকায় অনেকে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সচিবালয়ে আনসার বাহিনীর ঘেরাও, বিভিন্ন সংগঠনের নানা দাবি-দাওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হত্যা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার বিভিন্ন ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে অস্থিতিশীল করতেই এসব করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের ‘খারাপ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতি থাকতে হবে, রাজনীতিকে গ্রহণ করতে হবে। বিরাজনীতিকরণ কোনো সমাধান না। কারণ মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলে দিতে হবে- এটা কোনো সমাধান না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের একসময়ের সভাপতি মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র রাজনীতি যদি সুস্থ না হয়, দেশের রাজনীতি সুস্থ হবে না। আর ছাত্র রাজনীতি থেকে যদি নেতৃত্ব তৈরি না হয় তাহলে জাতির নেতৃত্ব তৈরি হবে না। এখন যদি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দেই, তাহলে কারা লাভবান হবে? যারা অন্ধকারের মধ্যে কাজ করে, তাদের জন্য ভালো হবে, যারা আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে কাজ করে তারা লাভবান হবে।

তিনি আরও বলেন, আগে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলুন। তাদের কাছে প্রস্তাবনা নিন। সেই প্রস্তাবগুলো নিয়ে যারা অভিজ্ঞ আছেন তাদের মতামত নিন।

নির্বাচনে যৌক্তিক সময়ের ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি ঠিক ওইভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বলিনি, বলব না, বলা উচিতও না। এটা তো একটা কাজের ব্যাপার। তবে যত দেরি হবে তত দেশের ক্ষতি হবে, সমাজের ক্ষতি হবে, রাজনীতির ক্ষতি হবে। কারণ রাজনৈতিক সরকারের কোনো বিকল্প নেই।

শেখ হাসিনার মামলা (মুখোমুখি) ফেইস করা উচিত উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এসেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। এগুলো তাকে আদালতেই মোকাবিলা করতে হবে। তিনি যদি সত্যিকার অর্থে রাজনীতিবিদ হন তাহলে নিজে এসে এখানে ফেইস করবেন।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪)