তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহিদ রিক্সা চালক বাবু মোল্যার কবর জিয়ারত করেছেন সমন্বয়ক শাকিল মোল্যর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নর্দান ইউনিভারসিটি বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল মোল্যর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের দক্ষিণ গঙ্গারামপুর গ্রামে বাবু মোল্যার বাড়িতে আসেন।

পরে শহীদ রিক্সা চালক বাবু মোল্যার কবর জিয়ারত করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।

পরে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা শহিদ বাবুর বাড়িতে যান। পরিবারের খোঁজ খবর নেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সেখানে কিছু সময় কাটান। শহিদ বাবু মোল্যা পরিবারের অভাব অনাটন ঘোচাতে ঢাকা যান। সেখানে তিনি অটোরিক্সা চালতেন।

গত ১৯ জুলাই অটো রিক্সা চালাতে গিয়ে ঢাকার রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে আন্দোলনের মাঝে পড়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান । পরদিন ২০ জুলাই শহিদ বাবুর মরদেহ গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ গঙ্গারামপুর নিয়ে আসা হয়। জানাযা শেষে গ্রামের কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়। একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে ৩ শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শহিদ বাবুর স্ত্রী শিল্পী বেগম (৩০) । বাবু মোল্যা দক্ষিণ গঙ্গারামপুর গ্রামের মরহুম মোঃ ফারুক মোল্যার ছেলে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক শাকিল মোল্যা সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের পরিবারের খাঁজ নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমরা শহিদ পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। তাদের পরিবার যাতে ভালভাবে চলতে পারে সেজন্য সহযোগিতা করা হবে । সেই সাথে শহীদ ও আহতদের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে। এটি দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

শহিদ বাবু মোল্যার স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, আমার ৩ ছেলে-মেয়ে। এরমধ্যে মেয়ে রোজের বয়স (৮), ছোট মেয়ে আয়েশার বয়স (৩ মাস), ছেলে ইয়ামিনের বয়স (৬)। সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন আমার স্বামী। তিনি মারা যাওয়ার পর গ্রামের মানুষের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে কোন রকমে সংসার চালাচ্ছি। ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত চিন্তায় এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আশা করি সরকার আমার পরিবারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। তিনি এসময় স্বামী হত্যার বিচার চেয়েছেন।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪)