একে আজাদ, রাজবাড়ী : বাবা ছিলেন মাটি কাটা শ্রমিক। ছেলে ভবঘুরে। বিয়ে করেন সাবেক রেলপথ মন্ত্রীর বাড়ির কাজের বুয়াকে। তাতেই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। বিয়ের দৌলতে পান ভূমি অফিসের পিয়ন পদে চাকরি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। রেলপথ মন্ত্রীর আশির্বাদ আর পিয়ন পোস্টে চাকরীর বদৌলতে পান বিলাসী জীবন। ১০ বছর চাকরী জীবনে গড়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি, কিনেছেন প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তি-জমিজমা। এই পিয়নের নাম জাকির সরদার। বাড়ি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার শাওরাইল ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের সাদেক সরদারের ছেলে।

জানা যায়, একসমসয় ভাতের জন্য হাহাকার করতে হতো জাকির সরদারের। তবে সাবেক রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের বাড়ির কাজের বুয়াকে বিয়ে করায় তার ভাগ্য খুলে যায়। জিল্লুল হাকিম উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে পিয়ন পোস্টে চাকরি পাইয়ে দেন। সেখানে নানান দুর্নীতি করে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। ২ বছর সেখানে চাকরী করার পর যোগদান করেন বাহাদুরপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। সেখানেও ২ বছর চাকরীর সুবাদে রেলপথমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্মে লিপ্ত হয়ে হাতান লাখ লাখ টাকা। এরপর যোগদান করেন কসবামাজাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। সেখানে গিয়ে ভাগ্যের চাকা আরও ঘুরে যায়। বানান টাকার পাহাড়। দুর্নীতির এই টাকা দিয়ে শাওরাইল ইউনিয়নের বিকয়া বাজারে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে জমি কেনেন। সম্প্রতি মাঠ জরিপে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। বর্তমানে তিনি কোটি টাকার মালিক। একজন সামান্য পিয়ন থেকে অল্প অসময়েই কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ায় এলাকাবাসীও হতবাক।

এলাকাবাসী বলছেন, পিয়নের চাকরি করে কিভাবে এত টাকার সম্পদ অর্জন করেলেন জাকির। আগে ঠিকমতো ভাত পেতেন না।

এদিকে পিয়ন থেকে কোটিপতি বনে যাওয়ায় বিষয়ে কথা বললে জাকির হোসেন বলেন, জমিজমা সবই আমি ও আমার ছোট ভাইয়ের নামে রয়েছে।

কোটিপতি পিয়নের বিষয়ে পাংশা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান রুবেল বলেন, ‘বর্তমান সরকার সরকারী সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর সম্পদের হিসাব চেয়েছেন। সেই তথ্য পেলে তদন্ত করে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪)