শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কার্যালয়ের কোনো গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন, বন বিভাগে আবেদন এরপর সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বন বিভাগ গাছের ভ্যালিয়েশন নির্ধারণ পূর্বক টেন্ডার তৈরী করে দিলেই গাছ কাটা যায়। তবে সেই নিয়মের ‘থোড়াই কেয়ার’করেছেন ঝিনাইদহ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী। অফিস প্রাঙ্গনের ভেতরের ৫টি বিশালাকৃতির মেহগনি গাছ কেটে ছুটির দিনে অগোচরে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। গাছ কাটা ও বিক্রি করতে নেননি কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি। করেননি আবেদন। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা বন বিভাগ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওজোপাডিকোর একজন কর্মচারী জানান, ‘গাছগুলো তাদের সামনেই বড় হয়েছে। প্রায় ২০ বছর গাছগুলোর বয়স। এতদিন কোন কর্মকর্তা এই গাছগুলো কাটেননি। কিন্তু দেশের এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাশেদুল ইসলাম গত শুক্র ও শনিবার গাছগুলো কেটে অগোচরে বিক্রি করে দিয়েছেন।’

জেলা বন বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক খোন্দকার গিয়াস উদ্দিন জানান, ‘নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কার্যালয়ের কোনো গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে বন বিভাগে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর বন বিভাগ কর্তৃক গাছের ভ্যালিয়েশন তৈরী করে দিলে গাছ কাটা যায়। কিন্তু সম্প্রতি ওজোপাডিকোর গাছ বিক্রির বিষয়ে কোন ভ্যালিয়েশন ঝিনাইদহ বন বিভাগ করেনি।’

অবৈধভাবে বিনা টেন্ডারে গাছ বিক্রির বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে সহকারি প্রকৌশলী হিমাদ্রী কুমার পোদ্দার জানান, ‘গাছ কাটার বিষয়ে আমার জানা নেই।’

ওজোপাডিকোর প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামসুল আলম জানান, ‘তিনি ঝিনাইদহে গাছ কাটার অনুমোদন দেননি। এ সম্পর্কে জানেনও না। আইনের তোয়াক্কা না করে গাছ কাটার বিষয়ে শীঘ্রই তদন্ত করা হবে।’

প্রসঙ্গত,নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীর ক্ষমতার অপব্যবহার, সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করা, বিদ্যুৎ অফিসে দালাল সিন্ডিকেট পরিচালনার মতো কর্মকান্ড ঝিনাইদহ শহরের টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।

(এসআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪)