একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কশবামাজাইল ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অবকাঠামো সংকট বিরাজ করছে। পুরাতন দু’টি ভবনের প্লাস্টার খসে রড বেরিয়ে পড়ছে। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

জানা যায়, ১৯৬৪ সালে প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা নারী শিক্ষা বিস্তারে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন খান বাহাদুর নাদির হোসেন, আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, এম. তোসাদ্দেক হোসেন, এহতেশাম হুসাইন, আলহাজ্ব এম. আফজাল হুসাইন, মোঃ মশিউর রহমান (মাখন বিশ্বাস) প্রমূখ স্মরণীয় হয়ে আছেন। স্থানীয়দের অনুদানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ নানা উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম পরিচালিত হলেও দীর্ঘ ৬০ বছরে বিদ্যালয়টি সরকারী ভবন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বঞ্চিত।

সরেজমিন দেখা যায়, স্থানীয়দের অনুদানে নির্মিত পুরাতন দু’টি ভবনের বেহাল দশা। ভবনের ছাদের বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টার খসে রড বের হয়ে পড়েছে। শিক্ষকদের কক্ষ, ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শ্রেণী কক্ষ, মশিয়ার রহমান মিলনায়তন, কবি সুফিয়া কামাল গার্লস হোম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন ও আয়েসা হোসেন স্মৃতি পাঠাগার এবং কম্পিউটার সাক্ষরতা কেন্দ্রসহ বিদ্যালয়ের সবগুলো স্থাপনার বেহাল দশা দৃশ্যমান। ঝুঁকি মাথায় নিয়ে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

এসএসসির ফলাফল, সরকারীভাবে বিভিন্ন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ছাত্রীরা বিভিন্ন সময় দেশ সেরা খ্যাতি অর্জন করে বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে এনেছে। এসবের মধ্যে এসএসসিতে ২০১৭ সালে অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রেসিডেন্ট এ্যাওয়ার্ড লাভ করে। পাংশা উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ২০২২ সালে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে আফিয়া সুলতানা এবং ২০২৩ সালে মুক্তা রানী মনোনীত হয়। এসএসসিতে বিদ্যালয়ের পাশের হার সন্তোষ জনক।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কমল চন্দ্র মন্ডল জানান, ১৯৬৪ সালে প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা নারী শিক্ষা বিস্তারে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়ের দুটি ভবনসহ নানা স্থাপনা স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাদের পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়রা এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। পুরাতন দু’টি ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের ছাদের প্লাস্টার খসে রড বের হয়ে পড়েছে। দেওয়ালের কোথায় কোথায় ফাটল ধরেছে। ঝুঁকি মাথায় নিয়েই পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষকরা। প্লাস্টার খসে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে অবকাঠামো সংকট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। অবকাঠামো সংকট দূরীকরণে শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন প্রধান শিক্ষক কমল চন্দ্র মন্ডল।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪)