রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইল সদর উপজেলায়  শিশু রাশিদুল ফকিরকে (৪) গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই সৎ মা রহিমা বেগমের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সদরের মির্জাপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিশুটির সৎ মায়ের স্বীকারোক্তিতে চাচিসহ ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শিশু রাশিদুল ফকির ওই গ্রামের রহিম ফকির ও মারিয়া আফসানা দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিলেন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে আনুমানিক আড়াই বছর আগে শিশু রাশিদুলের বাবা রহিম ও মারিয়ার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। দেড় বছরের শিশু রাশিদুুলকে ফেলে তার মা ঢাকায় চলে যান। রাশিদুলের দেখভালের জন্য দুই বছর আগে পরিবারের সিদ্ধান্তে বাবা রহিম ফকির রহিমা বেগমের সাথে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

আরও জানা যায়, দাদা দাদির অনুপস্থিতিতে শিশু রাশিদুলকে অমানবিক নির্যাতন চালাতো তার সৎ মা রহিমা। রহিমা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে সে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাশিদুল নিখোঁজ হলে স্থানীয়রা বাড়ি আশপাশে সব যায়গাতে মাছ ধরা জাল টেনে খোঁজ করেন। ওই দিন দিবাগত রাত আনুমানিক ১২ টার দিক রাশিদুলের দাদা কেরামত ফকির বাড়ির পাশে সন্নিকটের পুকুরে খোঁজ করতে গিয়ে শিম গাছের মাচার নিচে তার ভাসমান মরদেহ দেখে উদ্ধার করেন।

শিশুটির অস্বাভাবিক মৃত্যুতে স্বজনদের সন্দেহের কারনে পরের দিন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাশিদুলকে গলাচেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পানিতে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন সৎ মা রহিমা। এ ঘটনার সাথে নিহত রাশিদুলের চাচির সম্পৃক্তার কথা তার সৎ মা জানালে, পুলিশ তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উওরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, চার বছরের শিশু হত্যার ঘটনায় তার সৎ মা রহিমা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দোষ স্বীকার করেছেন। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

(আরএম/এএস/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪)