মোঃ আল-আমিন, শ্রীমঙ্গল : পুলিশে চাকরির দাপট দেখিয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের আলিশারকুল এলাকার নিরীহ তপন চন্দ্র দেবের সম্পত্তি দখলের চক্রান্ত করছে ভূমিদস্যুরা।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরজমিনে আলিশারকুল এলাকায় গিয়ে দেখা দেখা যায়, নিরীহ তপন চন্দ্র গত ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ইং তারিখে দলিল নং-১৫৭৪ মূলে জনৈক রবীন্দ্র চন্দ্র মালাকারের নিকট থেকে ৪১ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। তিনি উক্ত জমির খাজনা পরিশোধ করে ভোগ দখল অবস্থায় প্রতিবেশী ফুলচান বিবি ও তার প্রবাসী স্বামী সিরাজ মিয়ার কাছে ১৫ শতাংশ জায়গা বিক্রি করেন। ২৭ শতাংশ জায়গার মধ্যে ৩ শতাংশ জায়গা শ্মশান ও রাস্তার জন্য দান করে অবশিষ্ট ২৩ শতাংশ জায়গা নিজে ভোগ করে আসছেন।

তপন চন্দ্র দেব জানান, আমি ৪১ শতাংশ ভূমির মধ্যে ১৫ শতাংশ ভূমি তাদের নিকট বিক্রয় করার পর থেকেই আমার অবশিষ্ট ভূমি দখল করার পাঁয়তারায় লিপ্ত। তারা আমার ভূমির পিলার উঠিয়ে ফেলে দিয়ে আইল কেটে আমার ভূমি দখল করে নেয়। পরবর্তীতে আমার দান করা ভূমিতে গ্রামের পঞ্চায়েতের শ্মশান ভেঙ্গে ফেলে। ফুলচান বিবির স্বামী সিরাজ মিয়া প্রবাসী ও আপন ভাই আব্দাল পুলিশ সদস্য হওয়ার ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে এসব কাজ করছেন। আমাকে বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই গত ০৭ আগস্ট শ্রীমঙ্গল থানায় প্রশাসনের কাছে সুবিচার প্রত্যাশা করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

এব্যাপারে ভূনবীর ইউপি সদস্য বেলাল আহমেদ বলেন, আমি ফুলচান বিবির ভাই পুলিশ সদস্য আবদালকে ডেকে এনে কথা বলেছি। চেষ্টা করেছি বিষয়টি সমাধান করার জন্য কিন্তু সে সমাধানের পক্ষে কোন কথা বলেনি। জোর পূর্বক ভূমি দখল যারা করেছে আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তাদের উপর এই অমানবিক নির্যাতন আমার ওয়ার্ডবাসী মেনে নিবো না।

স্থানীয় মুরুব্বি ফজল মিয়া বলেন, সোমবার সকালে দেখলাম ফুলচাচা বিবি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ভূমির মধ্যে গেঁথে রেখেছেন তার দখলদারিত্ব বুঝানোর জন্য। আমরা ভালো করে অবগত এটা এই ভূমি তপন বাবুর। ফুলচান ও তার পরিবার তার ভাই পুলিশের প্রভাব দেখিয়ে চেষ্টা করছে জায়গাটি দখল করার। আমরা হিন্দু মুসলমান মিলেমিশে দীর্ঘদিন যাবৎ এই এলাকায় বসবাস করে আসছি। ইদানিং ফুলচান ও তার পরিবার ভূমি দখল করে এলাকায় একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

সম্পত্তি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রবাসী সিরাজের স্ত্রী ফুলচান বিবি বলেন, ১৫ শতাংশ জায়গা তাদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। বাকি জায়গার বায়না বাবদ ৫ লক্ষ টাকা প্রধান করেছি। তাই আমরা জমি দখল করেছি। তবে ৫ লক্ষ টাকা প্রদানের কোন ডকুমেন্টস আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন ডকুমেন্টস দেখাতে পারেননি।

ফুলচান বিবির ভাই পুলিশ কর্মকর্তা আবদালের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমি পরবর্তীতে আপনার সাথে যোগাযোগ করবো বলে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যপারে শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, আমি চেষ্টা করেছি বিষয়টি সমাধান করতে। ১৫ শতাংশ ভূমি বিক্রয় করার পরে অবশিষ্ট জমির মালিক তপন চন্দ্র দেব। ফুলচান বিবি ১৫ শতাংশ ক্রয়ের বাহিরে কোন ডকুমেন্টস আমাকে দেখাতে পারেনি। তাই আমি তাদের পরামর্শ দিয়েছি বিজ্ঞ আদালতের সমর্পণ হতে।

(এএ/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪)